দক্ষিণ দিনাজপুর: পতিরাম থানা এলাকার বোল্লা এলাকা। কয়েক শতক আগে এখানকার এক মহিলা স্বপ্নাদেশ পান। একটি কালো প্রস্তরখণ্ডকে মা রূপে পুজো করেছিলেন। এরপর সময় এগিয়ে অনেক। যত দিন গিয়েছে, বোল্লা এলাকার এই রক্ষাকালী হয়ে সকলের বোল্লা কালী। শুধু জেলার লোকজনই নন, বাইরে থেকেও বহু ভক্ত আসে এই পুজো দেখতে। রাসের পর প্রথম শুক্রবার থেকে এই বোল্লা কালীর পুজো হয়। আর পুজোর চারদিন পর বিসর্জন। সোমবার ছিল বোল্লা কালীর বিসর্জন। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় শ’য়ে শ’য়ে মানুষের ভিড় ঠেলে বোল্লা কালী এগিয়ে চলে নিরঞ্জনের পথে। সামনেই পুকুর। সেখানেই প্রতিমা নিরঞ্জন হয়।
এ বছর বোল্লা পুজোকে কেন্দ্র করে কড়া নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় এলাকা। পুলিশে ছয়লাপ চারদিক। ১৫০০ পুলিশ কর্মী ছিল এই পুজোকে কেন্দ্র করেই। সঙ্গে ছিল সাদা পোশাকের পুলিশ, সিসিটিভি আর দমকলের ব্যবস্থা। গত শুক্রবার বালুরঘাটের বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো শুরু হয়। পুজো উপলক্ষে চারদিন চলে বিশাল মেলা। লক্ষ লক্ষ ভক্ত এসেছেন এই ক’দিন। সকলেই বলেছেন, বোল্লা মা কাউকে খালি হাতে ফেরান না। তাই দক্ষিণ দিনাজপুরের পাশাপাশি রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে ভক্ত তো আসেনই। বাংলাদেশ থেকেও ভক্তরা আসেন।
জনশ্রুতি রয়েছে, এই এলাকায় বল্লভ মুখোপাধ্যায় নামে এক জমিদার ছিলেন। তাঁর নামেই এলাকার নাম হয় বোল্লা। এলাকার লোকজন বলেন, এই বোল্লা কালীর পুজো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে। কোম্পানির নথিতে এর উল্লেখ রয়েছে। আবার এমনও কেউ কেউ বলেন, মুরারীমোহন চৌধুরী নামে এক জমিদারের কথা। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে মামলায় জড়িয়ে গিয়েছিলেন তিনি। বোল্লা কালীর কাছে মানসিক করেন তিনি। সেই মামলা জিতেও যান। সে বছর থেকেই রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার পুজো করেন বোল্লা কালীর। শুক্র, শনি, রবিবারের পর সোমবার বিসর্জন হল প্রতিমার। এখানকার মানুষের কাছে বোল্লা কালী আবেগের আরেক নাম। নিরঞ্জনের সময় কত মানুষ যে আকুল চোখে চেয়ে থাকেন মাতৃমূর্তির আননে আর কত মানুষ যে অকাতরে কেঁদে ভাসান, বলার নয়।