বালুরঘাট: ফের আন্দোলনরত কৃষকরা। সার বিক্রিতে কালোবাজারি, খোলা বাজারে ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার প্রতিবাদ সহ একগুচ্ছ দাবি নিয়ে পথে নামলেন তাঁরা। দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষক সমিতির পক্ষ থেকে বালুরঘাটে জেলা খাদ্য দফতরের সামনে শুক্রবার ঘণ্টাখানেক বিক্ষোভ দেখান কৃষকরা। তাঁদের দাবিপূরণ না হলে আগামীতে আরও বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় ধান তোলা ও বিক্রির কাজ চলছে ৷ সরকারি ভাবে কৃষানমাণ্ডিতে ধান কেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ফরেদের দাপটে প্রকৃত কৃষকরা ধানের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না। এছাড়াও খোলা বাজারে ধানের মূল্যও খুবই কম। যার ফলে কৃষকরা সমস্যায় পড়ছে। এছাড়াও ধান চাষের খরচ উঠছে না বলে অভিযোগ। সেই প্রতিবাদেও সরব হয়েছে কৃষকরা।
এদিকে ধান তোলার পরে রবিশস্য ফসল চাষের ক্ষেত্রে সারের প্রয়োজন হচ্ছে। সেক্ষেত্রে সারের নির্দিষ্ট মূল্য থাকলেও সেই দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। যা নিয়ে জেলাজুড়েই কালোবাজারি চলছে। দেখা গিয়েছে, এক বস্তা পটাশের মূল্য ৯০০ টাকা, সেই পটাশ কালোবাজারির ফলে প্রায় ২০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ইউরিয়া ২৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা এবং ১০.২৬.২৬ সারের দাম ১২০০ টাকা থেকে প্রায় ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে চরম আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, মূলত, জেলায় সারের চাহিদা কম থাকাতেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা এই কালোবাজারীর সৃষ্টি করছে। তবে কৃষি দফতর জানিয়েছে, কৃষি দফতর ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক যোগে কালোবাজারি রুখতে অভিযানে নেমেছে। ইতিমধ্যেই সারের আমদানিও বেড়েছে। যার ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলেই দাবি।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কৃষক সমিতির সম্পাদক সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “একেকজন কম জমি থাকা সত্ত্বেও তারা সর্বাধিক পরিমাণ ধান কৃষানমাণ্ডিতে এসে বিক্রি করছে। অথচ যাদের জমির পরিমাণ বেশি, তারা সব ধান কৃষানমাণ্ডিতে বিক্রি করতে পারছে না। সরকারি এই জটিল পদ্ধতির ফলে অনেক কৃষকই বঞ্চিত হচ্ছে। খোলা বাজারেও ধানের দাম পাচ্ছে না। এছাড়াও সার নিয়ে চরম কালোবাজারি হচ্ছে। প্রায় দ্বিগুণ হারে সার বিক্রি হচ্ছে। যার প্রতিবাদে আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি। আগামীতে এই আন্দোলন আমরা চালিয়ে যাব।”
অন্যদিকে, জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, সরকারি কৃষান মাণ্ডিতে সরকারি মূল্যেই ধান বিক্রি হচ্ছে। খোলা বাজারের ধান বিক্রির বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। তবে সকলে যাতে ধান বিক্রি করতে পারে, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।