
দক্ষিণ দিনাজপুর: পাঁচ বছর পর বিচার পেল কুমারগঞ্জের পরিবার। বিচার পেল তাঁদের মেয়ে। শুক্রবার দোষী সাব্যস্ত। শনিবার হল সাজা ঘোষণা। এদিন তিন অভিযুক্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক। কিন্তু কী অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে?
৬ জানুয়ারি, ২০২০ সাল। পাঁচ বছর আগের ঘটনা। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বেলখোর এলাকার একটি কালভার্টের নীচে উদ্ধার হয় অগ্নিদগ্ধ দেহ। যখন এই দেহের সন্ধান পায় পুলিশ, ততক্ষণে পচন ধরতে শুরু হয়ে গিয়েছে। তড়িঘড়ি ফরেন্সিকের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় দেহটিকে। রিপোর্ট আসতেই জানা যায় দেহটি এক কিশোরীর। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা। কিন্তু তাঁর এই মর্মান্তিক পরিণতি করল কারা?
জানা গিয়েছে, ঘটনার আগের দিন ফুলবাড়ি বাজারে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল সে। কিন্তু তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে পরিবারের লোকজন খুঁজতে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু মেয়ের আর হদিশ মেলে না। এরপর দিন পেরতেই উদ্ধার পচা-গলা, অগ্নিদগ্ধ দেহ। ফরেন্সিকে জানা যায়, প্রথমে গণধর্ষণ, তারপর গলার নলি কেটে খুন। অবশেষে প্রমাণলোপাটের জন্য আগুন।
এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। তড়িঘড়ি তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। মহাবুর মিঞা, গৌতম বর্মন এবং পঙ্কজ বর্মনকে গ্রেফতার করে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। এদের প্রত্যেকের বাড়ি ওই কিশোরীর বাড়ির অনতিদূরে। এমনকি, অভিযুক্ত পঙ্কজের সঙ্গে যুবতীর প্রেম ছিল বলে আদালতে জানিয়েছিল পুলিশ। গ্রেফতারির পর ধৃতরাই পুলিশের কাছে গণধর্ষণ এবং খুনের কথা স্বীকার করে। এরপর শুরু হয় বিচারপ্রক্রিয়া। শনিবার হল সাজা ঘোষণা। এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি, ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং তা না দিতে পারলেও আরও তিন বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে আদালত।