বালুরঘাট : টিন দিয়ে কোনওরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করেছেন পেশায় কাঠমিস্ত্রি অখিল বিশ্বাস। বিপিএল তালিকাভুক্ত হওয়ায় বিনামূল্যে বিদ্যুতের সংযোগ পেয়েছেন তিনি৷ এদিকে বিপিএল তালিকাভুক্তের কারণে বেশিরভাগই সময় ছাড়ের ৭৫ ইউনিট পার হয় না। যার ফলে বিদ্যুৎ বিল আসে জিরো অ্যামাউন্ট। অথচ সেই ব্যক্তির বৈদ্যুতের বিল বাবদ বকেয়া রয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা (Electricity bill of 1 lakh)। এমন ভুতুড়ে বিল দেখে চক্ষু চড়কগাছ কাঠমিস্ত্রির। উড়েছে ঘুম। এমন বকেয়া বিল দেখে নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে ছুটেছে বিদ্যুৎ দফতরে। লিখিতভাবে তাঁর সমস্যার কথাও জানান। তবে তাতে লাভ কিছু হয়নি। মেটেনি সমস্যা। বকেয়া বিদ্যুৎ বিল নিয়ে নাজেহাল অবস্থা কাঠমিস্ত্রি অখিল বিশ্বাসের। বিগত কিছুদিন ধরেই এক লক্ষ টাকার বিলের বোঝা নিয়ে ইলেকট্রিক অফিসে হন্য হয়ে ঘুরছেন। অফিসে গেলে মিলছে তারিখ পে তারিখ। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে জানতে পেরেই পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে বালুরঘাট বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট (Balurghat) ব্লকের অমৃতখন্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের শনিহারা গ্রামের বাসিন্দা অখিল বিশ্বাস পেশায় কাঠমিস্ত্রি৷ বাড়িতে দুই ছেলে, পুত্রবধূ ও স্ত্রী রয়েছেন। তবে এক ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা থাকেন। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিপিএল তালিকায় নাম রয়েছে৷ ২০১৫ সালে বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেন৷ তারপর থেকে কোনও বিদ্যুৎ বিলই বাকি নেই বলে জানাচ্ছেন তিনি৷ তবে বেশিরভাগ সময় সাবসিডির ৭৫ ইউনিট না হওয়ায় বিদ্যুৎ বিল আসেই না। মাসে ৭৫ ইউনিটের কম বিল আসায় জিরো অ্যামাউন্ট বিল পান। কিছু মাসের ক্ষেত্রে সামান্য কিছু টাকা বিল বাবদ দিতে হয়।
অভিযোগ, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পরপর দুটি ত্রৈমাসিক বিল এসেছে। যাতে দেখা যায় একটিতে ৫২ হাজার ৩০০ টাকা আর একটিতে ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা বকেয়া রয়েছে। বিপুল অংকের ইলেকট্রিক বিল বকেয়া দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অখিলবাবু।
এ বিষয়ে কাঠমিস্ত্রি অখিল বিশ্বাস জানান, আগের বিলের বিষয়টি নিয়ে বালুরঘাট ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের আবেদন জানানোর পরও পরবর্তী তিন মাসের বিল আবারও ৫২ হাজার ৮০০ টাকা আসে। অর্থাৎ পরপর দুটি বিলে তার বকেয় বিল দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ১০০ টাকা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ আবেদন জানানোর পরও কোন সুরাহা হয়নি। কাজকর্ম বাদ দিয়ে তাকে প্রায়ই বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হচ্ছে। তাঁর সাফ দাবি, “যত টাকা বকেয়া বিল এসেছে, সেই টাকা আমি কেন আমার বাবারও দেওয়ার সাধ্য নেই।” অখিলবাবুর স্ত্রী কাঞ্চন বিশ্বাসের দাবি, তাঁরা গরিব মানুষ। মাত্র দুটি টিনের ঘর আছে। একটিমাত্র ছোট ফ্যান রয়েছে। তারপরও কি করে এত টাকা বিল হতে পারে তা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছেন তিনি। যদিও এবিষয়ে বালুরঘাট বিদ্যুৎ বন্টন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বজিৎ মন্ডল জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। ভুল থাকলে তা সংশোধন করা হবে বলেও জানিয়েছেন।