বালুরঘাট : পরিচালন কমিটির বৈঠকের আগে বালুরঘাট ল কলেজে (Balurghat Law College) ধুন্ধুমার কাণ্ড। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ কলেজ চত্বরেই। সংঘর্ষের জেরে মাথা ফাটল এক ছাত্রের। আহত ছাত্রের নাম মৃগাঙ্ক ঘোষ। ওই ছাত্রকে বর্তমানে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত বেশ কয়েকজন পড়ুয়া। এমনকী কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র কলেজে ঢুকতে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকে এক গোষ্ঠীর পড়ুয়ারা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার দুপুরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বালুরঘাট থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
এদিন বালুরঘাট ল কলেজে পরিচলন কমিটির বৈঠক ছিল। সেখানেই যোগ দেন কলেজের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। তার আগেই দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ায় তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। এক গোষ্ঠীর পড়ুয়াদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে পরিচালন কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত চার বছর ধরে কলেজে কোনও অডিট হয়নি। এরকমই একাধিক অভিযোগ নিয়ে তাঁরা এদিন ধর্নায় বসেন। অভিযোগ, তাঁদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করে অন্য গোষ্ঠীর পড়ুয়ারা। চালানো হয় হামলা। তখনই বেঁধে যায় সংঘর্ষ। দুই গোষ্ঠীর পড়ুয়ারা উইকেট, স্টাম্প, ক্রিকেট ব্যাট ও লাঠি সোটা নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বলে জানা যায়।
এদিকে অন্য গোষ্ঠীর পড়ুয়াদের অভিযোগ ধর্নায় বসা পড়ুয়ারা সব কাজে বাধা দেয়। কলেজেের পরিবেশ নষ্ট করছে। পড়াশোনায় বাধা দিচ্ছে। এর প্রতিবাদ করলেই তাঁদের তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিন তাঁরা এরই প্রতিবাদ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে বিপ্লব মিত্র যখন কলেজে ঢুকছেন তখনও হয়ে যায় একপ্রস্থ নাটক। এক গোষ্ঠীর পড়ুয়ারা গো ব্যাক স্লোগান দিতে থাকে, অন্যদিকে তাঁর অনুগামী পড়ুয়ারা বিপ্লব মিত্র জিন্দাবাদ স্লোগান দিতে থাকে৷ ২ গোষ্ঠীর পড়ুয়ারা স্লোগানের রেষারেষি শুরু করে দেয়।
এ বিষয়ে মন্ত্রীর বিরোধী গোষ্ঠীর রজত সাহা নামে এক ছাত্র বলেন, “আমরা কলেজের উন্নয়নের জন্য টাকা দিই। কিন্তু আমাদের ক্লাসরুমগুলির অবস্থা বেহাল। কমোন রুম গুলির অবস্থাও ভাল নয়। চারবছর ধরে অডিট হয় না। এছাড়াও আজকে শনিবার কেন পরিচালনা সমিতির সভা ডাকা হবে। এরই প্রতিবাদে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। ওই সময় একদল ছাত্র এসে আমাদের উপর চড়াও হয়। আমাদের একজনের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। আমাদের সকলকে মারা হয়েছে।”
এ বিষয়ে মন্ত্রী গোষ্ঠীর ছাত্রদের পক্ষে সৌসাম্য ঘোষ বলেন, “বালুরঘাট কলেজের পরিচালনা সমিতির সভা ছিল। এই সভাতে মন্ত্রী তথা পরিচালন সমিতির সভাপতির আসার কথা। আমরা পরিচালক সমিতিতে আমাদের কলেজের কিছু সমস্যা জানাব বলে ঠিক করেছিলাম। কিন্তু আচমকা একদল ছাত্র এসে আমাদের উপরে চড়াও হয়। ওই ছাত্ররা কলেজের ইউনিয়ন রুম দখল করে রাখে। বহু ছাত্রকে মারধর ও হুমকিও দেওয়া। ওরাই কলেজের পরিবেশ নষ্ট করছে।”
বৈঠক শেষে বালুরঘাট ল কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, কলেজের একজন প্রতিনিধি হিসাবে তিনি এসেছিলেন। সংঘর্ষের বিষয়টি তার জানা নেই বলেও জানিয়েছেন। এদিকে কলেজে আগামী দিন যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য গোটা কলেজ ক্যাম্পাস জুড়ে সিসিটিভি লাগানো হবে বলে জানা যাচ্ছে।