হরিরামপুর: বিয়ে হয়েছিল মাত্র দুমাস আগে। দেখাশোনা করেই। তবে টিকল না। আরও এক গৃহবধূর মর্মান্তিক পরিণতি হল। ‘পণ নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ’, কড়া আইন করেও যে কিছুই হচ্ছে না এই ঘটনা তার আরও একবার প্রমাণ।
ফের বিবাহ পরবর্তী পণেরর চাহিদা মেটাতে না পারার মাশুল দিতে হল এক গৃহবধূকে। আর্থিক চাহিদা মেটাতে না পারায় তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। মৃতার নাম গুলনেহার বিবি(২২)। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানা এলাকার হরিপুকুরে। সেখানেই শ্বশুরবাড়ির ঘর ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের দাবি, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। যদিও মৃতার গায়ে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল বলে তাঁর পরিবারের দাবি। ফলে গোটা ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় হরিরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে মৃতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার পর থেকেই পলাতক স্বামী সহ তাঁর পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে হরিরামপুর আবাদপুরের বাসিন্দা গুলনেহারের সঙ্গে বিয়ে হয় সাবিরুদ্দিন সরকারের। দুই পরিবারের মধ্যে দেখাশোনা করে সম্পন্ন হয় পরিণয়। সেই সময় দাবিমত পণ নিয়ে সাবিরুদ্দিন বিয়ে করেছিল। যদিও তার কিছু টাকা বাকি ছিল। মেয়ের পরিজনদের দাবি, বকেয়া পরিশোধ করতে কার্যত কালঘাম ছুটছিল তাদের। কিন্তু এরই মাঝে সাবিরুদ্দিন একটি নতুন টোটোর দাবি জানায়। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে সেই দাবির না মেটাতে পারায় চলত স্ত্রী গুলনেহারের উপর অত্যাচার। এমনকী দিনের পর দিন বেড়ে চলা সেই অত্যাচারে ও মারধর থেকে দূরে থাকতেন না অভিযুক্তর পরিবারও।
শেষমেশ মেয়েকে বাঁচাতে বিভিন্ন জায়গায় ঋণ করেই একটি নতুন টোটো কিনে দেন তাঁরা। পরে সেই ঋণ শোধের জন্য টাকা জোগাড় করতে দিল্লিতে কাজের খোঁজে চলে যান মৃতার মা ও ভাই। এরপরই সোমবার মেয়ের শ্বশুরবাড়ির তরফে তাঁদের জানানো হয়, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন গুলনেহার। যদিও তার পরিবারের অভিযোগ, খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের মেয়েকে। কারণ শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হরিরামপুর থানার পুলিশ। তারা এসে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পরে মৃতার পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যদিও ঘটনার পর থেকেই পলাতক স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
আরও পড়ুন: Susanta Ghosh: ‘এরা পশুদেরও অধম’, পিংলায় নির্যাতিতার পরিবারকে সাহায্য করতে গিয়ে বললেন সুশান্ত