শিলিগুড়ি : পরপর নিখোঁজ একাধিক কিশোরী। দিশেহারা বাবা-মা। তদন্তে নেমে প্রথমে কুলকিনারা খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশও। কিন্তু, তদন্ত যত এগোতে থাকল, পুলিশের কাছে সব কিছু পরিষ্কার। একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা গেল নিখোঁজ কিশোরীদের। কিন্তু, অভিযুক্তের নাগাল পাওয়া গেল না। হাল ছাড়েনি পুলিশও। শেষপর্যন্ত ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত-সহ ২ জন। তারপরই জানা গেল, শিলিগুড়িতে নারী পাচারের (girl trafficking) অভিনব পন্থা। আজ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) শুভেন্দ্র কুমার জানান, নারী পাচারের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম রাহুল সরকার ও উত্তম সূত্রধর। রাহুলের বাড়ি অসমের কোকড়াঝাড়ে। আর উত্তমের বাড়ির শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানার দশরথপল্লিতে।
কিশোরীদের কীভাবে পাচার করা হত?
অসম থেকে এসে শিলিগুড়িতে কিশোরী-যুবতীদের সঙ্গে প্রথমে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করত রাহুল সরকার। তারপর যাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হত, তাদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করত। টাকার লোভ দেখাত। আর তার ফাঁদে যারা পা দিত, তাদের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করত রাহুল। এলাকার যুবক উত্তমের সঙ্গে যোগসাজসে এই কাজ করত সে। ভক্তিনগর এবং শিলিগুড়ি মহিলা থানায় এমন তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়।
অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। ওই কিশোরীদের বন্ধুদের বিষয়ে খোঁজ করতে গিয়ে পুলিশের খটকা লাগে। নিখোঁজ হওয়ার আগে এক যুবকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল ওই কিশোরীদের। তিনজনের ক্ষেত্রেই একই ঘটনা ঘটায় পুলিশের বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তাদের পাচার করা হয়েছে। একাধিক সূত্র ধরে তিন কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ।
কিশোরীদের উদ্ধার করা গেলেও রাহুলের নাগাল পায়নি পুলিশ। শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এসওজি ও ভক্তিনগর থানার পুলিশ নিরলস চেষ্টা করে চলে। শেষপর্যন্ত পুলিশের জালে ধরা পড়ে রাহুল। সে নিজেকে কখনও রাহুল, কখনও রাজু কখনও সফিজুল ইসলাম বলে পরিচয় দিত। দু’জনকেই আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে চাইছে, এই চক্রে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না। তারা আরও কাউকে পাচার করেছে কি না, তাও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।