Mamata Banerjee: ‘বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল পাহাড়ে রক্ত ঝরায়’, ক্ষুব্ধ মমতা, ‘বাংলাদেশ নিয়ে ভাবুন’, পাল্টা বিজেপি

BJP: নির্বাচন আবহে কার্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল উত্তরবঙ্গ।  নির্বাচন চলাকালীন শীতলকুচির গুলিকাণ্ডের জের গড়িয়েছিল অনেকদূর। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার অনতিপরেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা।

Mamata Banerjee: 'বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল পাহাড়ে রক্ত ঝরায়', ক্ষুব্ধ মমতা, 'বাংলাদেশ নিয়ে ভাবুন', পাল্টা বিজেপি
মমতাকে পাল্টা তোপ বিজেপির, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 26, 2021 | 7:48 PM

উত্তরবঙ্গ: একুশের নির্বাচনে জয়লাভের পর প্রথমবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার কার্শিয়াং-এ প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে নাম না করে বিজেপিকে (BJP) নিশানা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। পাল্টা তোপ দাগল পদ্ম শিবিরও।

পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে গিয়ে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, “নতুন ভোটার তালিকা এলেই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হবে।” তারপরেই বলেন, “আমি জানি, এখানে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল পাহাড়ে রক্ত ঝরায়। কাশ্মীর, দার্জিলিঙ কত সুন্দর! কেন বারবার দার্জিলিঙে রক্ত ঝরবে! কেন একসঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করা যাবে না! অনীত, রোশনদের বলব, পাহাড়ে আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঝগড়া করতে চাই না। সকলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়নের কাজ করব।”

মুখ্য়মন্ত্রীর এই মন্তব্যের কার্যত পাল্টা তোপ দেগেছে পদ্মশিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “মমতা ক্ষমতায় থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হবে। পাহাড়ে নির্বাচন নিয়ে ওঁ চিন্তিত। আর যারা পুলিশ খুন করল তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের উপর থেকে কেন মামলা সরিয়ে নিল রাজ্য সরকার? মুখ্যমন্ত্রীকে বলব আপনি কাশ্মীর নিয়ে না ভেবে বরং বাংলাদেশ নিয়ে ভাবুন। কাশ্মীরটা আমরা সামলে নেব। ”

অন্য়দিকে, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “৫৩ জন বিজেপি কর্মী খুন। তাদের কানে বলুন। সিপিএম করে যে খুন, তার বাড়িতে গিয়ে বলুন শান্তি চাই।” তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দল রাজনীতি করবেই। বাম জমানা থেকে পাহাড়ে আমরা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ চাই না। আমরা জনগোষ্ঠীর নামে রাজ্য গঠনে বিরোধী।”

উল্লেখ্য, নির্বাচন আবহে কার্যত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল উত্তরবঙ্গ।  নির্বাচন চলাকালীন শীতলকুচির গুলিকাণ্ডের জের গড়িয়েছিল অনেকদূর। ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার অনতিপরেই উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি করেছিলেন বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন একাধিক পদ্ম নেতা। যদিও, পরে বিজেপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, দল এমন কোনও মন্তব্যকে সমর্থন করে না।

অন্য়দিকে, পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিকে সমর্থন না করলেও পাহাড় নিয়ে বরাবর আশাবাদী তৃণমূলকে  অবশ্য ‘নিরাশ’ হতেই হয়েছে। পাহাড়ে এখনও সেভাবে আসর জমাতে পারেনি তৃণমূল কংগ্রেস। ফলে, পাহাড়ে বিশেষ নজর দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী খোদ। একদা, পাহাড়ের যে নেতা বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য সরকার, নির্বাচনের আগে সেই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। বিমল গুরুঙ জানিয়ে দেন পাহাড়ে তাঁর দল তৃণমূলের হয়ে লড়াই করবে। আর তাই নিয়েই এদিন সরব হন সুকান্ত। পুলিশ খুনের মতো অভিযোগ উঠেছিল যে বিমলের বিরুদ্ধে তিনি কেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমনই প্রশ্ন তুলে কার্যত কটাক্ষ হানেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।

পাশাপাশি, সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ বেড়েছে। জঙ্গিদের হামলায় একাধিক সাধারণ মানুষ, সেনাজওয়ান মারা গিয়েছেন। সদ্যই কাশ্মীর সফর সেরেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পাকিস্তানে নতুন জঙ্গি সংগঠন তৈরি করে নতুন কায়দায় ভারতে হামলা চালানো হচ্ছে বলেই জানিয়েছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার, প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেই বলেন, “কেন কাশ্মীরে, পাহাড়ে বারবার রক্ত ঝরবে!” পাল্টা, সুকান্তের দাবি, কেন বাংলাদেশ নিয়ে চুপ করে রয়েছেন মমতা?

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে সরব হয়েছে পদ্ম শিবির। একের পর এক হিন্দু মন্দিরে হামলা, দুর্গাপুজোয় বাধা থেকে শুরু করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ব্যাপক হামলার অভিযোগ প্রায়ই উঠে আসছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির তরফে একাধিক প্রতিবাদ মিছিল বা  পদ্ম নেতাদের মন্তব্য সামনে এলেও খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও মন্তব্য চোখে পড়েনি। তৃণমূলের পক্ষ থেকেও সেভাবে নজরকাড়া কোনও মন্তব্য করা হয়নি। যা নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। মঙ্গলবার, ফের সেই বিতর্কই উসকে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

আরও পড়ুন: Sukanta Majumder: ‘মমতা থাকলে রাজ্য আফগানিস্তান হবে’