
দুধিয়া: বিপর্যস্ত দুধিয়া। চারদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ। মৃত্যু হয়েছে একাধিক জনের। আজ, মঙ্গলবার দুধিয়ায় ত্রাণ শিবিরে পৌঁছে স্বজনহারাদের সঙ্গে কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুধিয়ায় ভেঙে পড়া ব্রিজ ও রাস্তা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সারানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণশিবিরে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের পাশে বসেই উদ্ধারকারীদের কাজের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
পাশাপাশি নিহতদের পরিবার পিছু এক জন সদস্যকে হোমগার্ডে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, “যিনি চলে গিয়েছেন, সেই ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব নয়। তবে যাঁরা রয়ে গিয়েছেন, তাঁদের সামনের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে চলতে হবে। তাই চাকরির ঘোষণা।” তবে এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, “হাইট, অ্যাডমিশন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ওখানে ছাড় পাবেন। রিটন পরীক্ষা দিলেই হবে।” এবিষয়ে জেলাশাসকদের ডেটা তৈরির করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
পাশাপাশি দুর্গত এলাকায় কমিউনিটি কিচেন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ মমতার। নেপাল ভুটানের বাসিন্দাদের কিছু দেহ ভেসে এসেছে জলে। তাঁদের দেহ শণাক্ত করে দ্রুত যাতে সেদেশের সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেকথাও জানিয়ে দিয়েছেন। দুধিয়ার পাশাপাশি রোহিনীর রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। এদিন আরও একবার মমতা বললেন, ভুটানের জলেই বাংলা এতটা বিপর্যস্ত। তাঁর কথায়, “শুধু আমাদের এখানকার জলে নয়। বাংলার যা ভৌগোলিক অবস্থান, তার জন্যই এই অবস্থা। পাহাড়ের ওপর কোনও নির্মাণ করতে গেলে একশো বার ভাবুন। ভুটানে কেউ ঘর বানাতে সমতলে বানায়, কিন্তু মিরিকে এরকমটা হয় না। এতে ভূমিকম্পেও তো অনেক সমস্যা হয়।”
যাঁদের ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
যাঁদের সমস্ত নথি নষ্ট হয়ে গিয়েছে, সেগুলোও করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আধার কার্ড রেশন কার্ড, কাস্টা সার্টিফিকেট তৈরি করে দেওয়া হবে আলাদা ক্যাম্পের মাধ্যমে। ত্রাণ শিবিরের কাজের তদারকির জন্য় সরকারি আধিকারিকদের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা।
চাষিদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের কৃষক বিমার আওতায় ক্ষতিপূরণ মিলবে বলেও আশ্বাস মমতার। এদিন ত্রাণ শিবিরে বসেই মমতা বলেন, “পরিস্থিতি যখন খারাপ হয়, তখন ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কেউ কেউ উস্কানি দেয়। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”
সোমবারই উত্তরবঙ্গে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার নাগরাকাটায় যেখানে বিজেপি সাংসদ আক্রান্ত হয়েছেন, তার থেকে মাত্র ১৬ কিলোমিটার দূরেই দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন মমতা। এদিন দুধিয়া হয়ে মমতা যাবেন মিরিকে। সেখানে বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।