মালবাজার: তৃণমূলে কি শুদ্ধিকরণ শুরু হয়ে গেল? তাও আবার উত্তরবঙ্গ থেকেই? এই প্রশ্নেই জোর চর্চা মালবাজারে। জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক এবং কার্যকরী সভাপতি গৌতম গোস্বামী জমি কাণ্ডে গ্রেফতার হন। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কারের পর নানা দুর্নীতির অভিযোগে আচমকাই তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হয়ে যান স্বয়ং মাল পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা। একাধিক কাউন্সিলর এবং পুরকর্মীর ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে। নগর উন্নয়ন দফতরের তরফে পৌরসভায় তদন্তে ১৩ সদস্যের তদন্তকারী দল। সূত্রের খবর, পুলিশে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
দল থেকে অপসারিত চেয়ারম্যান স্বপন সাহার দাবি, “দলের দুই কাউন্সিলর ক্ষমতার লোভেই বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চক্রান্ত করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। খারাপ সময়ে দলের পাশে থাকলেও এভাবে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল। আমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকেও ইস্তফা দেব৷ কিন্তু এটুকু বলব আমি দুর্নীতিগ্রস্থ নই। দলের খারাপ সময়েও দল করেছি। আজ সব ধুলোয় মিশে গেল। আমি পদত্যগ করছি।”
তৃণমূলের অন্য গোষ্ঠীর তরফে কাউন্সিলর পুলিন গোলদার বলেন, “ক্ষমতার চেয়ারে বসে দুর্নীতি করেছেন চেয়ারম্যান। সরকারের তদন্তেই তা পরিষ্কার। আবাসের ঘর, পানীয় জল প্রকল্প, বিদ্যুতায়ন প্রকল্পে ভুয়ো বিল দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্য়ে ক্ষোভ জমেছে। চেয়ারম্যান পদে উনি ইস্তফা দিলে বা দল নির্দেশ দিলে আমরা নতুন চেয়ারম্যান মনোনীত করব। ২০২৬ সালের আগে স্বচ্ছ বোর্ড উপহার দেব। আমি বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাইনি।”
রাজ্যের কাছে তথ্য দিয়েছিলেন যে আইনজীবী সেই সুমন শিকদার বলেন, “আমি বিজেপি করি। সবার সঙ্গেই পরিচয় আছে। এর সঙ্গে বিজেপি-তৃণমূলের যোগসূত্র নেই। আমি হাইকোর্টেও মামলা করেছি। যেভাবে দুর্নীতি হয়েছে তার সব তথ্য তদন্তকারীদের দিয়েছি।” এখন স্বপন সাহা ইস্তফা দিলে ক্ষমতার দখল কোন শিবিরের হাতে যায় তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে হইচই শুরু হয়েছে। মোট ১৫ কাউন্সিলরের মধ্যে ১টি আসন বিজেপির দখলে থাকলেও বাকি ১৪টিই তৃণমূলের দখলে। এই পরিস্থিতিতে কে চেয়ারম্যান হতে পারেন তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে শহরে।