শিলিগুড়ি: দুর্গাপুজোকে ইউনেস্কোর স্বীকৃতিকে স্মরণীয় করে রাখতে চেয়েছিলেন শিলিগুড়ির নর্থ বেঙ্গল এক্সপ্লোরার্স ক্লাবের অভিযাত্রী দল। আর তাই এটিকে স্মরণীয় করে রাখতে হিমালয়ের কোলে পাড়ি দিয়েছিলেন আট অভিযাত্রী। গন্তব্য ছিল নেপালের মাউন্ট অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প। উচ্চতা ৪ হাজার ১৩০ মিটার। চারিদিকে সাদা বরফ। ১ অক্টোবর বিকেলে শিলিগুড়ি থেকে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। এক অদ্ভুত হাতছানি। সেই টানেই যাত্রা শুরু। প্রথম দিকে আবহাওয়া অনুকূলই ছিল। কিন্তু তৃতীয় দিন থেকে শুরু হয় সমস্যা একের পর এক দুর্যোগ। শুরুর দিকে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও এগিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু আরও এগোতে সমস্যা বাড়তে থাকে। উপরে হিমবাহ ফাটার কারণে যাত্রাপথের নদী ও ঝোরাগুলি পার করা রীতিমতো দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে।
যাঁরা পাহাড়কে ভালবাসেন, তাঁদের কাছে অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প অন্যতম একটি আকর্ষণের জায়গা। দেশ-বিদেশের বহু পর্বতারোহী দল এখানে আসেন। কাঠমান্ডু থেকে পোখরা হয়ে ফেদী, ধামপাস, লান্ড্রুক, ছামরঙ, দেওরালি হয়ে পাহাড়ি ট্রেক রুট চলে যায় অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে। কিন্তু পরিবেশ প্রতিকূল হতে থাকায় অনেক অভিযাত্রী দলই নিজেদের অভিযানসূচি বাতিল করে নীচে নেমে যায়। তবে শিলিগুড়ির এই অভিযাত্রী দলের মধ্যে ছিল অদম্য ইচ্ছাশক্তি। অভিযাত্রী দলে ছিলেন ৬ যুবক ও ২ যুবতী। পরিবেশ প্রতিকূল হতে থাকলেও একটুও মনোবল হারাননি তাঁরা।
সমস্ত দুর্যোগ মাথায় নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকেন তাঁরা। যত উপরে উঠতে থাকেন, তত তাপমাত্রা কমতে থাকে। মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া, বৃষ্টি… তার উপর পায়ের তলায় ৩-৪ ফুট পুরু বরফের স্তর। একের পর এক বাঁধা পেরিয়ে তাঁরা এগোতে থাকেন অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পের দিকে। শেষে ৬ অক্টোবর অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে পৌঁছান তাঁরা। সেখানে পতাকা লাগিয়ে আবার নীচে নেমে আসেন তাঁরা। ওই অভিযাত্রী দলের টিম লিডার শঙ্কু বিশ্বাস জানান, দলের সকল সদস্য সুস্থ রয়েছেন। তাঁরা আগামী ১১ অক্টোবর সকাল ৯ টা নাগাদ শিলিগুড়ি পৌঁছবেন।