শিলিগুড়ি : স্ত্রীর বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক (Extramarital affair) রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকেই এই সন্দেহ দানা বেঁধেছিল স্বামীর মনে। সেই সন্দেহের বশেই চরম সিদ্ধান্ত নিলেন স্বামী। স্ত্রীকে ঘুরতে নিয়ে গিয়ে দেহ দু’টুকরো করে ক্যানেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি (Siliguri) মহকুমার ফাঁসিদেওয়ার গোয়ালটুলি মোড় সংলগ্ন এলাকায়। মৃত গৃহবধূর নাম রেণুকা খাতুন। অভিযুক্ত স্বামীর নাম এম ডি আনসারুল।
সূত্রের খবর, গত ৬ বছর আগে শিলিগুড়ি ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের দাদাভাই কলোনির বাসিন্দা এম ডি আনসারুলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রেণুকা খাতুনের। সম্প্রতি ওই গৃহবধূ শিলিগুড়ির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে শিলিগুড়ি কলেজ পাড়ার একটি বিউটি পার্লারে কাজ শিখতে যেতেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্র খবর, ঘটনার দিন মৃতের স্বামী তাঁকে নিজের বাইকে করে পার্লারে ছাড়তেও এসেছিলেন। তারপর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি রেণুকার। গত ২৪ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করে রেণুকার পরিবার। এরপরই তদন্তে নামে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। তাতে পর্দা ফাঁস হয় নিঁখোজ রহস্যের।
বুধবার রাতে গৃহবধূর স্বামী এম ডি আনসারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁর বক্তব্যে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখতে পান তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা। ম্যারাথান জেরার মুখে ভেঙেও পড়েন এম ডি আনসারুল। জানান তাঁর দীর্ঘদিন থেকেই সন্দেহ ছিল তাঁ স্ত্রীর অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশি জেরাতেই তিনি স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকারও করেন। জানান গত ২৪ ডিসেম্বর স্ত্রীকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ফাঁসিদেওয়ায় তিস্তা ক্যানেলে নিয়ে যান আনসারুল। সেখানেই স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করেন তিনি। দেহ থেকে আলাদা করে দেন মাথা। এরপর দেহ এবং মাথা দুটি আলাদা আলাদা বস্তায় ভরে ক্যানেলে ফেলে দেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী জানান, “ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ শিলিগুড়ি থানায় মিসিং ডায়েরি দায়ের করা হয়েছিল। তবে রেণুকা খাতুনের স্বামীর উপর পুলিশের সন্দেহ থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সে স্বীকার করে নিয়েছে খুনের কথা। দেহ দু’টুকরো করে তিস্তার ক্যানেলে ভাসিয়ে দিয়েছে৷ সেখানে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল তল্লাশি চালাচ্ছে। মেয়ের পরিবারের লোকও রয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের হাতে বেশ কিছু তথ্য প্রমাণও উঠে এসেছে।”