
শিলিগুড়ি: এক ধাক্কায় পুরো কুড়ি টাকা! বাড়ল দেশি মদের দাম। শুক্রবার থেকেই রাজ্য জুড়ে কার্যকর হচ্ছে এই নয়া দাম। আগে ৬০০ মিলিলিটার প্লাস্টিকের বোতলে দেশি মদের দাম ছিল ১০০ টাকা। এবার সেটা গিয়ে দাঁড়াল সেটা ১২০ টাকায়। এদিন এক বিবৃতিতে এমনই জানিয়েছে রাজ্যের আবগারি দফতর।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আয় বাড়াতে রাজ্যের তরফে কর বাড়ানোর জন্যেই এই মূল্যবৃদ্ধি হল। আগে দেশি মদের বোতলের দাম ছিল একশো টাকা। তাতে বোতল পিছু ৭৪ টাকা ৪০ পয়সা কর নিত রাজ্য। এখন দেশি মদের বোতল পিছু দাম হল ১২০ টাকা। রাজ্য বোতল পিছু কর নেবে ৮৭ টাকা।
অন্যদিকে বিদেশি মদের দাম অবশ্য একই থাকছে। সেখানে কর কাঠামোয় কোনও পরিবর্তন বা বৃদ্ধি হয় নি। তবে দেশি মদের দাম এভাবে বাড়ায় ফের চোলাই এর রমরমা হতে পারে বলে আশঙ্কা। উল্লেখ্য, লকডাউনের মাঝে মদের দোকান খোলায় তৃষ্ণা মেটাতে পেরে হাঁফ ছেড়েছিলেন সুরাপ্রেমীরা। কিন্তু রাজস্ব বাড়াতে পশ্চিমবঙ্গ সহ বিভিন্ন রাজ্য সরকার মদের উপর করের হার বাড়িয়েছে, অথবা নয়া কর বসিয়েছে। এর ফলে দেশি মদের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে যাওয়ায় তা সাধারণ সুরাপ্রেমীদের অনেকেরই আর্থিক সাধ্যের বাইরে চলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তাই মদের দাম বেড়ে যাওয়ায় মদের অনুরাগীদের একাংশ বাধ্য হয়েই অপেক্ষাকৃত কম দামের দেশি মদ পান করা শুরু করবেন এবং দেশি মদের ক্রেতাদের একটা বড় অংশ ফের অস্বাস্থ্যকর ও বেআইনি চোলাই পানে ফিরবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে, রাজ্যগুলির আবগারি রাজস্ব বাড়ানোর উদ্দেশ্য ‘অর্থনীতির দুষ্টচক্রে’ বিফল হয়ে যেতে পারে। মধ্য ও উচ্চ বিত্তরা মূলত বিদেশী মদ খান। সেক্ষেত্রে এই বিপুল দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কেন দেশি মদকে বেছে নেওয়া হল সে প্রশ্নও উঠছে। দিকে এই সিদ্ধান্তকে বিঁধতে ছাড়েনি বিরোধীরা। তাদের কটাক্ষ, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের (Lakshmir Bhandar) টাকা তুলতেই এভাবে দেশি মদের দাম বাড়ানো হল। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘এ রাজ্যে মদের সুনামি চালাচ্ছে রাজ্য। আর তার থেকে প্রাপ্ত করের টাকায় দানছত্র চলছে।’
প্রসঙ্গত, সুরাপান নিয়ে গোটা দেশে সম্প্রতি একটি যৌথসমীক্ষা চালায় ICRIER এবং আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা পিএলআর চেম্বার্স। সেই সমীক্ষায় প্রকাশ, মদ্যপানে দেশে প্রথমে উত্তরপ্রদেশ। তারপর দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যের প্রায় ১ কোটি ৪০ লক্ষ মানুষ সুরা পান করেন। তাই এই বিভাগ থেকে আসে প্রচুর রাজস্ব। সমীক্ষার ফল বলছে, মদ এ রাজ্যে শীর্ষ তিনটি কর বাবদ আদায়ের অন্যতম মাধ্যম। তবে সম্প্রতি মদের দামের মডেল পরিবর্তন করা হয়। যার জেরে ইন্ডিয়ান মেড ফরেন লিকারের দাম পরিবর্তন হয়েছে। তাতে অবশ্য সুরাপান বিরতি নেই এ রাজ্যে। আরও পড়ুন: শিক্ষাদফতরে চাকরি চেয়ে মত্স্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধরনা প্রার্থীদের!