কলকাতা: দুয়ারে সরকারের প্রথম দিনেই বিপুল চাহিদার মুখ দেখল লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রথমদিন জমা পড়া আবেদনের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার জন্য জমা পড়েছে। গোটা দিনে সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। আগামী ১ মাস ধরে গোটা রাজ্যে এই কর্মসূচি চলবে সরকারের। ফলে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার আবেদনও যে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে, তা অনুমান করাই যায়।
নবান্ন সূত্রে খবর, দুয়ারে সরকারের প্রথম দিন সরকারের কাছে প্রায় ১৫ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই লক্ষ্মীর ভান্ডারে নাম নথিভুক্ত করার আবেদন। সব থেকে বেশি আবেদন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে এসেছে। আবেদনের পরিমাণ ২ লক্ষ ৯৩ হাজার। অন্যদিকে, সোমবার বিভিন্ন জেলা থেকে দুয়ারে সরকারের শিবিরে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হওয়ার বিষয়টিও নবান্নের নজরে এসেছে বলে খবর। যে কারণে জেলাশাসকদের আরও অতিরিক্ত ক্যাম্প চালু করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে একাধিক ক্ষেত্রে যে অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে তাও নজর এড়ায়নি নবান্নর। যে কারণে ঠিক কী ভাবে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যাবে তা পইপই করে বুঝিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরও কিছু বেনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলিকে কড়া হাতে মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে।
মমতা জানান, “পুরোপুরি বিনামূল্যে এই প্রকল্পে আবেদন জানানোর ফর্ম পাওয়া যাবে।” কী ভাবে আবেদন জানাতে হবে? মমতা বলেন, “দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য কাউন্টার থাকবে, সবার প্রথম সেখানে যেতে হবে। সেখানে গেলেই একটি ফর্ম পাওয়া যাবে। সেই ফর্মে একটি নির্দিষ্ট নম্বর থাকবে। সেই নম্বরের রেকর্ড সরকারের কাছেও থাকবে।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, “এই ফর্ম কোনও ভাবে জেরক্স বা ডুপ্লিকেট করা যাবে না। এই ফর্ম ছাড়া অন্য কোনও ফর্ম নেওয়াও হবে না। কেউ যাতে এই ফর্মের অপব্যবহার করতে না পারে তার জন্যই এই ব্যবস্থা।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “ফর্মটা পাওয়ার পর আপনারা ওখানেই ফর্মটা ফিলআপ করে জমা দেবেন। মনে রাখবেন, ফর্মের সঙ্গেই কম্পিউটার জেনারেটেড ইউনিক নম্বরটা থাকবে। এটার সঙ্গে আধার কার্ডও লিঙ্ক করে দেওয়া হবে। এই নম্বরটাই ফর্ম ফিলাপের জন্য স্বীকার্য হবে। ঘুরপথে যদি কেউ অন্যভাবে ফর্ম জোগাড় করে তা জমা দেওয়ার চেষ্টা করে, সেটা কিন্তু মেনে নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র দুয়ারে সরকার শিবির থেকেই ফর্ম নিতে হবে।”
‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার জন্য কর জমা দেওয়ার কোনও ধরনের বাধ্যবাধকতাও নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে গোটা প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে যদি কোনও বেনিয়মের অভিযোগ থাকে, তার জন্য পৃথক হেল্পলাইন নম্বরও চালু করেছে রাজ্য। এই নম্বরটি সোজা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। ১০৭০ অথবা ২২১৪ ৩৫২৬- এই টোল-ফ্রি নম্বরে ফোন করে অভিযোগ জানালেই সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। আরও পড়ুন: এক ব্যক্তি, এক পদ: সংগঠনের খোলনলচে বদলে ফেলল তৃণমূল, বাদ গেলেন বালু-মহুয়া সহ অনেকে