বাঁকুড়া: তপ্ত রোদে গত কয়েক দিন ধরে হাঁসফাঁস করছিল দক্ষিণবঙ্গবাসী। মার্চ মাসেই এমন অবস্থা দেখে কার্যত আতঙ্কে বঙ্গবাসী। কিন্তু গতকাল সেই আতঙ্কেই একটু স্বস্তির ছিটে দিয়েছে মরসুম। চারিদিক অন্ধকার করে নেমেছে শিলাবৃষ্টি।
বলে রাখা ভাল, এই স্বস্তি কিন্তু সকলের নয়। গতকালের শিলাবৃষ্টিতে রীতিমতো ফাঁপড়ে পড়েছেন বাঁকুড়ার আলু চাষিরা। মাসের পর মাস ধরে কষ্ট করে ফলানো ফসল একটা বৃষ্টিতেই শেষ। মাথায় হাত বহু কৃষকের।
বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর, কোতলপুর ও জয়পুর ব্লকে হাজার হাজার হেক্টর জমি জুড়ে চাষ হয় আলু। এমনকি, শুধুই আলু নয়। এই এলাকায় জমিগুলিতে তিল-সহ আরও বেশ কিছু সবজি চাষ করে থাকেন স্থানীয় কৃষকরা। চলতি বছর নিম্নচাপের জেরে আলুর মরসুম শুরু হয়েছিল বেশ কিছুটা দেরিতে। সেই কারণে এখনও মাঠেই পড়ে রয়েছে ফসল। আর তার মধ্যে উত্তাল শিলাবৃষ্টি। যার জেরে একেবারে লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শিলাবৃষ্টির জেরে একেবারে সাদা হয়ে গিয়েছিল জমিগুলি। ক্ষতি হয় আলু-সহ আরও কিছু সবজিরও। বেশ কিছু কৃষকরা অতিরিক্ত লাভ তোলার জন্য আলু তুলে বস্তাবন্দি করে জমিতেই মজুত করে রেখেছিল। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে সেই লাভও আর তোলা হল না তাদের। শিলাবৃষ্টির তোড়েই ‘কাকভেজা’ হয়ে গেল আলু। ক্ষতি হয়েছে পেঁয়াজ, আদা, রসুন-সহ আরও বেশ কিছু সবজিরও।
কৃষকদের দাবি, বিগত কয়েক বছরে চাষের প্রয়োজনীয় রসায়নিক সামগ্রীর দাম দ্বিগুণ হারে বেড়েছে। সেই তুলনায় মিলছে না ফসলের দাম। আর তার মধ্যেই অকাল বৃষ্টিতে সব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কার্যত ‘রাস্তায় বসার’ উপক্রম।
এই প্রসঙ্গে এক আলু চাষি জানাচ্ছেন, ‘এই ভিজে যাওয়া আলুগুলিকে আর কোনও ভাবেই রক্ষা করা যাবে না। এগুলি নষ্ট হতে বাধ্য। বিকালবেলায় এমন বৃষ্টি আসবে, তার কোনও পূর্বাভাস ছিল না। শিলাবৃষ্টির পরিমাণ এতটাই ছিল যে আলু সব ফেটে গিয়েছে।’