Local News: কোলের ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী ঘর ছাড়তেই বদলে গেল লোকটা, এখন শিকল পরিয়ে রাখেন বৃদ্ধা মা

Ashique Insan | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Jul 30, 2023 | 10:41 AM

Hooghly: একমাথা চুল, মুখে কাঁচা পাকা দাড়ি কাজলের। রাস্তার ধারে টিনের ঘরে আটকে রাখেন মা। মাঝেমধ্যে টিনের ফাঁক দিয়ে মুখ বার করে বিড়বিড় করে কিছু বলেন। কখনও টুম্পা, কখনও আবার কমল, কখনও বাবু বলে ডাকাডাকি করতে থাকেন।

Local News: কোলের ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী ঘর ছাড়তেই বদলে গেল লোকটা, এখন শিকল পরিয়ে রাখেন বৃদ্ধা মা
মা বিশাখারানি পাল।
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

হুগলি: বছর কুড়ি ধরে একটু একটু করে মানসিক অবসাদ গ্রাস করছিল। এখন পরিস্থিতি একেবারেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে। একা একা কথা বলে, মাঝেমধ্যে স্ত্রীর নাম ধরে ডেকে ওঠে। ভাবেন ছেলে বুঝি এখনও ছোট্ট ‘বাবু’টিই আছে। হুগলির ব্যান্ডেলের কাজিডাঙা এলাকার বছর পঞ্চাশের কাজল পাল। তাঁকে নিয়ে বৃদ্ধ মায়ের এখন অসহায় জীবন। ছেলেকে পায়ে শিকল পরিয়ে রাখেন। পাছে এদিক ওদিক চলে যায় কিংবা কিছু করে বসে।

ধুমধাম করেই বিয়ে হয়েছিল কাজলের। বাচ্চার বয়স যখন তিন বছর, স্ত্রী কোলের সন্তানকে নিয়ে সংসার ছাড়েন। বৃদ্ধা মা বিশাখারানি পাল জানান, এরপর থেকেই ছেলের মধ্যে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। মানসিক একাকিত্বে কুঁকড়ে থাকতেন। চিকিৎসার জন্য স্থানীয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে নিয়েও যান। তবে ডাক্তাররা কলকাতা নিয়ে যেতে বলেছিলেন।

তবে পরিবারের যা আয় তাতে ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় ছোটা সম্ভব ছিল না, বললেন মা। এরপর মানসিক সমস্যা চরমে ওঠে। বিভিন্ন জায়গায় চলে যেতেন কাজল। এরপরই বৃদ্ধা মা প্রৌঢ় ছেলেকে একেবারে শিশুর মতো বেঁধে রাখতে শুরু করেন। তবে এ বাঁধন কিছুটা কঠিনও। বলা ভাল শৃঙ্খল। তবু মায়ের কিছুই যে করার নেই। তিনি যে একা। ছেলেকে সামলাবেন কী করে?

একমাথা চুল, মুখে কাঁচা পাকা দাড়ি কাজলের। রাস্তার ধারে টিনের ঘরে আটকে রাখেন মা। মাঝেমধ্যে টিনের ফাঁক দিয়ে মুখ বার করে বিড়বিড় করে কিছু বলেন। কখনও টুম্পা, কখনও আবার কমল, কখনও বাবু বলে ডাকাডাকি করতে থাকেন। বিশাখাদেবী জানান, আগে এ বাড়ি ও বাড়ি গিয়ে ছেলে চিৎকার চেঁচামেচি করত। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই গত দু’বছর শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছেন এই ছেলেকে।

ছেলেকে নিয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলেই চোখে জল চলে আসে বিশাখারানি পালের। বলছিলেন, “ছেলের এমন দশা চোখে দেখা যায় না। ওকে শিকল পরাতে বুক ফেটে যায়। বিভিন্ন জায়গায় চলে যেত বলে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছি। টাকা পয়সা নেই। ছেলের চিকিৎসাও করাতে পারছি না। এ ছেলের যে কী হবে কে জানে।” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পীযূষকান্তি ধর জানান, চিকিৎসার খরচ অনেকটাই। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি যদি এগিয়ে আসেন খুব ভাল হয়।

Next Article