
হুগলি: ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে পরিচয়। কিছুদিনের মধ্যেই তরুণী ও তাঁর পরিবারের বিশ্বাস অর্জন। আর সেই বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে তরুণীর কাছ থেকে ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযোগ পেয়ে ২ জনকে গ্রেফতার করল হুগলির সাইবার ক্রাইম থানা। ধৃতদের নাম অভিষেক রায় এবং জাহির আব্বাস। ধৃতদের কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত।
শুক্রবার হুগলি সাইবার ক্রাইম থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার। তিনি জানান, গত ২৬ মে হুগলির সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণী। হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, কয়েকমাস আগে একটি ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের মাধ্যমে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। নিজেকে বড় ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন ওই যুবক।
কল্যাণ সরকার বলেন, “প্রতারক ওই ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। নিজেকে অনুপম রায় বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। তরুণী ও যুবকের মধ্যে ফোনে কথোপকথন শুরু হয়। কয়েকদিনের মধ্যে প্রতারক ওই তরুণী ও তাঁর পরিবারের বিশ্বাস অর্জন করেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ওই প্রতারক তরুণীকে জানান, তাঁর ব্যবসা সংক্রান্ত কিছু জিএসটি বিশেষ কারণে দিতে না পারায় তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ওই তরুণীকে একটি অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে প্রতারক বলেন, এই অ্যাকাউন্টে কিছু টাকা দিলে ট্যাক্স পরিশোধ করলে আবার ব্যবসা শুরু হবে। প্রথমে কিছু টাকা দেয় তরুণী ও তাঁর পরিবার। এরপর একাধিক অ্যাকাউন্টে তরুণী ও তাঁর পরিবার ধাপে ধাপে মোট ৪৪ লক্ষ টাকা দেয়।”
পরে তরুণী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তারপরই তিনি সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খতিয়ে দেখে। এরপর ওই ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে গিয়ে দেখা যায়, অনুপম রায় বলে অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে।
২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
ওই প্রতারক নিজেকে চালের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। ধৃত ২ জনকে নিজের ম্যানেজার বলে জানিয়েছিলেন। ধৃত অভিষেক ও জাহির ম্য়ানেজার পরিচয় দিয়ে তরুণীর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলতেন। ধৃত অভিষেকের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে। গড়িয়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাটও আছে তাঁর। অন্যদিকে জাহির আব্বাসের বাড়ি হুগলির খানাকুলে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, একাধিক এটিএম কার্ড এবং ব্যাঙ্কের পাসবুক। পাশাপাশি তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ছয় লক্ষ টাকা। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটের মাধ্যমে হুগলিতে এই ধরনের প্ৰতারণা প্রথম বলে দাবি পুলিশের। মূল অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।