হুগলি: বৃদ্ধ বাবাকে থেঁতলে খুনের অভিযোগ উঠল মেয়ের বিরুদ্ধে। ভয়ঙ্কর এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপাড়া (Uttarpara) ভদ্রকালীর প্রশান্ত দত্ত সরণিতে। অভিযোগ, ওই বৃদ্ধকে তাঁর মেয়ে মাথা থেঁতলে খুন করেন। অভিযুক্ত মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।
মৃতের নাম কালীপদ দাস (৮৩)। অভিযুক্ত মেয়ের নাম কেয়া দাস (৪০)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কেয়ার বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তবে সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। ডিভোর্সের পর মা-বাবার কাছে প্রশান্ত দত্ত সরণির বাড়িতেই থাকেন। কেয়ার এক পুত্রসন্তানও রয়েছে। সেও মামার বাড়িতেই মায়ের সঙ্গে থাকে।
কালীপদ দাস রেলে কাজ করতেন। অবসর নিয়েছেন বহুদিন হল। স্থানীয় সূত্রে খবর, বাবার সঙ্গে প্রায়ই অশান্তি হতো মেয়ের। কিন্তু কী নিয়ে সেই অশান্তি তা স্পষ্ট নয় এলাকাবাসীর কাছে। শনিবার দুপুরেও বাবার সঙ্গে একপ্রস্ত ঝামেলা বাধে মেয়ের।
এরপর কালীপদবাবু স্নানে যান। অভিযোগ স্নানঘরেই তাঁকে খুন করা হয়। মেয়ে কেয়া ভারী কিছু দিয়ে বাবার মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ গিয়ে দেখে বৃদ্ধের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে বাথরুমে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে আটক করা হয়েছে কালীপদবাবুর মেয়ে কেয়া দাসকে। যদিও সেই সময় নাতি বাড়িতে ছিল না।
বীভৎস এই ঘটনা কেন ঘটল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তবে সংবাদমাধ্যমকে অভিযুক্ত কেয়া দাস বলেন, “বাবা আমাদের তাড়িয়ে দিচ্ছিল বাড়ি থেকে। অনেক অত্যাচার করেছে আমাদের।” তবে কেয়ার দাবি তাঁর ছেলে অভিষেক অধিকারী এই ঘটনায় কোনও ভাবেই যুক্ত নয়। কেয়া দাস বলেন, “আমার ছেলেকে তাড়িয়ে দেয় বাবা। তারপরই আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। আমি জিজ্ঞাসা করি বাবাকে, ছেলে কোথায় গেল? বলে, তাড়িয়ে দিয়েছে। তখন খুব ঝগড়া হয় বাবার সঙ্গে। তখন বাঁশ নিয়ে বাবা তেড়ে আসে আমার দিকে। আমিও হাত থেকে বাঁশ কেড়ে নিয়ে পাল্টা মারি। বেশ করে মেরেছি। অনেকবার মেরেছি।”
কেয়া জানান, তাঁর ছেলে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। উত্তরপাড়া কলেজ থেকে পাশ করেছে। প্রায়ই বাবার সঙ্গে ঝামেলা হতো। এদিনও তেমনটাই হয়। এরপরই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে যায়। তৃণমূলের ১২ নম্বর ওয়ার্ড প্রেসিডেন্ট বিকাশচন্দ্র রায় বলেন, “আমি ক্লাবে বসেছিলাম। আমারই এলাকার একটি মেয়ে কেয়া দাস গিয়ে বলল আমি বাবাকে মেরে ফেলেছি। তখন আমরা ছুটে আসি। ডাক্তারকে খবর দিই। ডাক্তার এসে জানান ওই বৃদ্ধ মারা গিয়েছেন। পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয়। তারাও আসে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে তারা।”
আরও পড়ুন: Fake Police Personnel: মাস্ক না পরলেই পথ আটকে টাকা আদায়, গ্রেফতার ভুয়ো পুলিশ