হুগলি: ব্রিটিশদের হাত থেকে চন্দননগরকে রক্ষা করতে শহরের চারদিকে পরিখা কেটেছিল ফরাসিরা। এতগুলো বছর কেটে গেলেও ভোট এলে ফরাসিদের কাটা ‘গড়’ই ইস্যু হয়ে ওঠে রাজনৈতিক দলগুলির। ২২ জানুয়ারি চন্দননগর পুরনিগমে ভোট। তার আগে ফরাসিদের স্মারক গড় সংস্কারই ইস্যু করছে ডান, বাম সবপক্ষ।
চন্দননগরকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের থেকে আলাদা করতে শহরের চারদিকে পরিখা কেটেছিল ফরাসীরা। প্রায় ৭ কিলোমিটার লম্বা এই গড় বা খাল চন্দননগরের প্রধান নিকাশি। চন্দননগর স্টেশন এলাকা থেকে একটি দক্ষিণমুখী খাল গিয়ে গঙ্গায় পড়েছে। আর এই একই জায়গা থেকে আরও একটি খাল যেটি উত্তরমুখী সেটি হরিদ্রাডাঙা হয়ে গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে।
বাম জমানায় এই খাল নিয়ে নানা অভিযোগ শোনা যেত। তৃণমূলের আমলেও সেই একই অভিযোগ উঠেছে। এলাকার লোকজনের কথায়, অবহেলিত খাল নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। আবর্জনার স্তুপ জমেছে খালজুড়ে। বিভিন্ন জায়গায় খাল দখল করে বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। যদিও এই দখল নিয়ে ডান-বাম দুই শিবিরই একে অপরকে দোষারোপ করে।
তবে দোষারোপের রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হয় না। বরং খাল ঠিকভাবে পরিষ্কার না হওয়ার ফলে নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। অল্প বৃষ্টি হলেই শহরের ১৫, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড-সহ বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
এ নিয়ে চন্দননগরের বিদায়ী মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, গোটা খাল সংস্কার করতে বহু টাকার প্রয়োজন। এর জন্য যা যা পদক্ষেপ করা দরকার তাঁদের দল করেছে। ডিপিআরও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এখন শুধু নতুন বোর্ড তৈরির অপেক্ষা। নতুন বোর্ড তৈরি হলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।
বিদায়ী মেয়র রাম চক্রবর্তীর কথায়, “২০১০ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর আমরাই এই খাল সংস্কার নিয়ে চিন্তা করেছিলাম। ২০১২-১৩ সাল আমরা কাজ করেছিলাম। ওখানে অনেকটা কাজও হয়। তবে পুরো কাজটা করতে যে টাকার প্রয়োজন, সেই সময় আমরা তা পাইনি। পরবর্তী সময়ে আমরা আবেদন করি রাজ্য সরকারের কাছে। ১ কোটি টাকার একটা বরাদ্দ হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে তাতে হবে না। আরও টাকা দরকার। আমাদের বিশ্বাস একটা বরাদ্দ হবে। ডিপিআর জমা পড়েছে। আমরা বিশ্বাসী এ বছর তা মঞ্জুর করে আমরা কাজটা করে ফেলতে পারব। সত্যি এটা আমাদের চন্দননগরে সীমানা গড় হিসাবে খ্যাত।”
অন্যদিকে সিপিআইএমের গোপাল দাস বলেন, “গড় সংস্কারের জন্য অতীতেও বিভিন্ন সময় কথা হয়েছে। আমাদের যখন সংযুক্ত নাগরিক কমিটির বোর্ড ছিল ৩০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট তৈরি করে দিল্লি থেকে অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসি। কাজ সবে শুরু হয়। সেই সময় বোর্ডটা আমাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। পরবর্তীকালে দীর্ঘদিন কাজ হয়নি।”