
হুগলি: শহুরে একাকিত্বে ঘেরা ফ্ল্যাট বাড়িগুলিতে বড্ড নিঃসঙ্গ বয়স্ক সদস্যরা। রোজকার যাপনে তাল কাটে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে। ডাক্তার ডাকার লোকটুকুও নেই হাতের কাছে। এরকমই উত্তরপাড়ার এক বৃদ্ধাকে ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে উদ্ধার করল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ‘স্পর্শ’। ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। হুগলির উত্তরপাড়ায় ১৬ নম্বর ওয়ার্ড। সেখানকার জেকে স্ট্রিটের জগন্নাথ অ্যাপার্টমেন্টের চারতলায় একাই থাকেন রেখা মুখোপাধ্যায়। অনেকদিন ধরেই সেখানে বসবাস করছেন তিনি। একা ফ্ল্যাটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের উত্তরপাড়া থানার স্পর্শ টিম। তাঁর দেখভালের দায়িত্ব নেয় তারা। এই স্পর্শ এলাকার বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের দেখভালের জন্য তৈরি হয়েছে।
এরইমধ্যে আবাসনের লোকজন লক্ষ্য করেন ৪-৫ দিন ধরে রেখাদেবীর কোনও সাড়াশব্দ নেই। এরপরই উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবকে খবর দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় কাউন্সিলর ডলি ঘোষ যাদব স্পর্শ টিম নিয়ে ফ্ল্যাটে উপস্থিত হন।
বারবার কলিং বেল বাজালেও কোনও সাড়াশব্দ আসেনি। এরপর পুলিশ বাধ্য হয়ে দরজার তালা ভাঙে। গিয়ে দেখে বিছানায় পড়ে আছেন রেখাদেবী। বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পুরসভার অ্যাম্বুলেন্সেই উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্পর্শ টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কৃষ্ণধন চট্টোপাধ্যায় জানান, তিনি কয়েকদিন ছিলেন না। তাই খোঁজ খবর নিতে পারেনবি। এরইমধ্যে ফ্ল্যাটের লোকজন পুরপ্রধান, কাউন্সিলরকে খবর দেন। এরপরই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
রেখাদেবীর ফ্ল্যাটের আবাসিক অঞ্জনা সাহা জানান, বছরখানেক হতে চলল রেখাদেবীর কোনও আত্মীয়স্বজনের দেখা নেই। অথচ আর্থিকভাবে যথেষ্ট সবল তিনি। এক সময় বহু লোকজন আসতেন। একজন এসে খাবার দিয়ে যান নিয়মিত। গত কয়েকদিন ধরে কোনও আওয়াজ পাচ্ছিলেন না। এরপরই তাঁরা তৎপর হন। আবাসিকরা চান, পুলিশ রেখাদেবীকে কোনও বৃদ্ধাশ্রম বা সরকারি হোমে রাখার ব্যবস্থা করুক। কাউন্সিলর ডলি ঘোষ যাদব বলেন, “এ ধরনের দৃশ্য অত্যন্ত যন্ত্রণার। একা একা থাকেন ওই বৃদ্ধা। উনি সুস্থ হয়ে ফিরলে আবাসনের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে একটা ব্যবস্থা করব।”