
চন্দননগর: স্ত্রীকে বলেছিলেন, ‘পাহাড়ের টান তুমি বুঝবে না…’ বারণ সত্ত্বেও নাকি শুনতেন না কথা। যখন-তখন বেরিয়ে যেতেন ট্রেকিংয়ে। কিন্তু এইবারই বিপদ ধেয়ে আসবে তা কে ভেবেছিল। উত্তরাখণ্ডের মদমহেশ্বরে ট্রেকিংয়ে গিয়ে নিখোঁজ চন্দননগরের অভিযাত্রী রাজীব বিশ্বাসের। দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবার।
জানা গিয়েছে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর ১১ জনের একটি ট্রেকিং দল হাওড়া থেকে উপাসনা এক্সপ্রেস ধরে উত্তরাখণ্ড রওনা দেয়। সেই দলের মধ্যে ছিলেন চন্দননগর সুভাষ পল্লীর রাজীব বিশ্বাসও (৫৩)। তাঁদের গন্তব্য ছিল মদমহেশ্বর। গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাশি থেকে ট্রেক শুরু করে মদমহেশ্বরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জানা গিয়েছে, সেখানে একজনের পায়ে ব্যথা হওয়ায় তাঁরই সঙ্গে থেকে যান রাজীব। বাকিরা বেস ক্যাম্পে নেমে আসেন।
পরদিন নীচে নামার সময় নতুন রুট ধরেন রাজীববাবু। তাঁর সঙ্গে থাকা বাকি অভিযাত্রীরা জানিয়েছেন, ওই রাস্তা দিয়ে শর্টকাটে নীচে নামা যায়। রাজীবের সঙ্গে থাকা অভিযাত্রীরা পুরনো রুটে নেমে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু রাজীবের দেখা মেলেনি। পরে রাশিতে ফিরে এসে অন্যদের খবর দেন। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। স্থানীয় উখিমঠ থানায় যোগাযোগ করেন বাকিরা। পুলিশ রেসকিউ টিম নিয়ে খোঁজ শুরু করে। জানা গিয়েছে, রাজীববাবুর ফোন বন্ধ রয়েছে। আজও জারি রয়েছে তল্লাশি অভিযান। ড্রোন দিয়ে খোঁজ করা হচ্ছে তাঁর।
জানা গিয়েছে, চন্দননগরে রাজীববাবু বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী মেয়ে। স্ত্রী রানু বিশ্বাস বলেন, “২৬ তারিখ শেষ ফোনে কথা হয় ওর সঙ্গে। বলেছিল উপরে উঠলে আর ফোনে টাওয়ার থাকবে না। তাই কথা বলা যাবে না।” তিনি আরও জানান, “একটা মন্দিরে জুতো খুলে ঢুকেছিল। সেখানে চশমা ফেলে এসেছিল। ওর পাহারে ট্রিকিং করা নেশা ছিল। এর আগে মানস সরোবর, কৈশাল, সান্দাকফু, কাশ্মীর সহ বিভিন্ন জায়গায় ট্রেকিং করেছে।বারণ করলে শুনত না। বলত পাহাড়ের টান তুমি বুঝবে না। এসবে ভীষণ মজা। এরপর কেদারনাথ যাওয়ার কথা ছিল।”
রাজীবের জামাইবাবু সুকান্ত লাহিড়ী জানান, ওর মামা নিখোঁজের খবর পেয়ে রওনা দেয় উত্তরাখণ্ডে। রাজীবের বন্ধু গোপাল দাস বলেন, “ও খুব ভালো ফুটবল খেলত। কলকাতার মাঠেও খেলেছে। নেশা ছিল পাহারে ট্রেক করা।আমারও কয়েকবার গেছি একসঙ্গে।”