Chinsura Court: ছেলের HS-এর দিন খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ক্ষতবিক্ষত দেহ, TMC কর্মী খুনে ৮ CPM-কে ১৫ বছর পর সাজা শোনাল কোর্ট

Hooghly: ২৭ শে জুন ২০১৭ সালে চার্জ গঠন হয়। বিচার পক্রিয়া শুরু হয়। ১২ জন সাক্ষী দেন এই মামলায়। ঘটনায় চারজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। বিচার পর্ব চলার সময় দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। আটজন জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত ৬ নভেম্বর তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় কুমার শর্মা। আজ সাজা ঘোষণা হয়।

Chinsura Court: ছেলের HS-এর দিন খাল থেকে উদ্ধার হয়েছিল ক্ষতবিক্ষত দেহ, TMC কর্মী খুনে ৮ CPM-কে ১৫ বছর পর সাজা শোনাল কোর্ট
সাজা ঘোষণা কোর্টেরImage Credit source: Tv9 Bangla

| Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Nov 11, 2025 | 6:59 PM

গুড়াপ: কেটেছে প্রায় পনেরো বছর। হুগলির গুড়াপে খুন হয়েছিলেন এক তৃণমূল কর্মী। সেই ঘটনায় আট জন সিপিএম কর্মীকে সাজা দিল কোর্ট। দোষীদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা চুঁচুড়া আদালতের। সাজাপ্রাপ্ত সিপিআইএম কর্মীরা হল তৎকালীন গুড়বাড়ি -১পঞ্চায়েত প্রধান লালু হাঁসদা,রবি বাস্কে, লক্ষ্মীরাম বাস্কে, সিদ্ধেশ্বর মালিক, সনাতন মালিক, গণেশ মালিক, লক্ষ্মীনারায়ণ সোরেন, নাড়ু টুডু। এই ঘটনায় অমর রুইদাস ও নেপাল মালিক নামে আরও দু’জন বাম কর্মী ছিলেন। তবে বিচার প্রক্রিয়া চলাকালীন মারা যান তাঁরা।

সালটা ২০১০ এর ১৮ মার্চ। হুগলির গুড়াপে খুন হন তৃণমূল কর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রম। সেই ঘটনায় চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় কুমার শর্মা অভিযুক্ত আট সিপিআইএম কর্মীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাজা শোনায়।

যে দিন ক্ষুদিরাম খুন হন, সেদিন মৃত ক্ষুদিরামের ছেলে সুনীল হেমব্রমের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ছিল। মাঠে কাজ করে বন্ধু তপন রুইদাসের মেয়ের দেখাশোনার জন্য তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন ১৯ তারিখ ডিভিসির ক্যানেল থেকে বস্তাবন্দি রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় ক্ষুদিরামের। রাজনৈতিক কারণে তৃণমূল কর্মী ক্ষুদিরাম হেমব্রমকে কুপিয়ে খুন করে জলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।

এরপর গুরাপ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তপন রুই দাস। গুড়াপ থানার পুলিশ তদন্তে নেমে দশজন সিপিআইএম কর্মীকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, তথ্য প্রমান লোপাট, অস্ত্র হাতে অপরাধ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়। চুঁচুড়া আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।

২৭ শে জুন ২০১৭ সালে চার্জ গঠন হয়। বিচার পক্রিয়া শুরু হয়। ১২ জন সাক্ষী দেন এই মামলায়। ঘটনায় চারজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। বিচার পর্ব চলার সময় দুই অভিযুক্তের মৃত্যু হয়। আটজন জামিনে ছাড়া পেয়েছিলেন। গত ৬ নভেম্বর তাদের দোষী সাব্যস্ত করেন চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক সঞ্জয় কুমার শর্মা। আজ সাজা ঘোষণা হয়।

এই মামলার সরকারী আইনজীবী চণ্ডিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার আবেদন জানিয়েছিলাম। আদালত তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের সাজা শুনিয়েছে। দশ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন। অনাদায়ে এক বছর জেলের সাজা শুনিয়েছেন। নৃশংসভাবে ক্ষদিরামকে খুন করা হয়েছিল।” হুগলি জেলা আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী শঙ্কর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় ১৫ বছর সময় লেগে গেল এই মামলার রায়দান হতে। তবে এর জন্য সরকারি আইনজীবী বা আদালত কেউই দায়ী নয়। মামলা চলাকালীন আসামি পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে ধরা এবং তথ্য প্রমাণ জোগাড় করে পুলিশ চার্জশিট দিয়েছিল। তারপর বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই খুনে যে নৃশংসতা ছিল সেই কারণেই আদালত 8 জন দোষীকেই যাবজ্জীবন সবসময় কারাদণ্ড সাজা শুনিয়েছে।”

ক্ষুদিরামের স্ত্রী মালতি হেমব্রম বলেন, “ফাঁসি হলে ভাল হত।আমার স্বামী চিরজীবনের মত চলে গেল।ছেলেমেয়েরা ছোট ছিল। তাঁদের অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছি।” ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র বলেন, “ধনেখালিতে সিপিআইএম অনেক তৃণমূল কর্মীকে খুন করেছে। তাঁদের হার্মাদ বাহিনী অত্যাচার চালাত।২০১১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিবারগুলোকে বিচার দেওয়ার চেষ্টা করছি।” তবে,আদালত থেকে বেরোনোর সময় দোষীরা জানায়,তাঁরা সিপিএম করেন বলে তাদের ফাঁসানো হয়েছে।