Dilip Ghosh: ‘কেউ তো বলেনি আপনি মেরেছেন, ননসেন্সের মতো কথা’, শিশুমৃত্যুতে দিলীপের নিশানায় ববি!

Unknown Fever: শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাল্টা, পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদের দাবি, বঙ্গের অবস্থা বিজেপি শাসিত রাজ্য়গুলির থেকে ভাল।

Dilip Ghosh: 'কেউ তো বলেনি আপনি মেরেছেন, ননসেন্সের মতো কথা', শিশুমৃত্যুতে দিলীপের নিশানায় ববি!
ফিরহাদকে তোপ দিলীপের, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 17, 2021 | 10:54 PM

হুগলি: অজানা জ্বরে কাঁপছে বঙ্গ। ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫শিশুর। রাজ্য জুড়ে আক্রান্ত দেড় হাজারেরও বেশি। রাজ্যের সার্বিক স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে উঠছে প্রশ্নও। এই পরিস্থিতিতে  রাজ্যের শিশু মৃত্যুর পরিস্থিতি নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যের সঙ্গে তুলনা টানলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। পাল্টা তাঁর মন্তব্যকে ‘ননসেন্স’ বলে কটাক্ষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)।

অজানা জ্বরে একের পর আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। আসন্ন করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য যে বিশেষ পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্যভবন তার কোনটিই যে প্রতিপালিত হয়নি, শিশুদের সংক্রমণ ও হাসপাতালের চরম অব্যবস্থার ছবিতেই তা স্পষ্ট। শুক্রবার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। পাল্টা, পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদের দাবি, বঙ্গের অবস্থা বিজেপি শাসিত রাজ্য়গুলির থেকে ভাল।

সে প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এদিন বলেন, “ফিরহাদ হাকিম এমন ননসেন্সের মতো কথা বলেন কেন! কেউ কি বলেছে আপনি বাচ্চাদের মেরেছেন। বাচ্চাদের এই সংক্রমণ নিয়ে সকলে চিন্তিত। সেখানে সাধারণ মানুষই চান এই পরিস্থিতির দ্রুত মোকাবিলা করা হোক। সেক্ষেত্রে যদি কেন্দ্র রাজ্য হাত মিলিয়ে কিছু পদক্ষেপ করে তাতে ক্ষতি কী!”

শুক্রবার, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar) বলেন, “আমি একাধিকবার এই বিষয়ে দৃষ্টিআকর্ষণ করেছি। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় আরও জোর দেওয়া দরকার। বাচ্চাদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত পরিষেবাগুলিতে নজরদারির প্রয়োজন। আমি আশা করব, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সুদৃঢ় হবে।”

এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রাজ্যপাল মহোদয়কে বলব এই পরামর্শগুলি উনি যেন উত্তরপ্রদেশে দেন। যেখানে ১৬টা বাচ্চা অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়েছে। যেখানে শ্মশানের অভাবে গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় উনি একটু বেশি করে পরামর্শ দিন। আমাদের এখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ঠিকই আছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যের থেকে আমাদের স্বাস্থ্য় পরিকাঠামো অনেকাংশে উন্নত।”

উল্লেখ্য, গতকাল অজানা জ্বরে শিশু মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন শুভেন্দু অধিকারী।  রাজ্যে বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদল পাঠাতে আর্জিও জানিয়েছেন অধিকারী পুত্র। নিজের ফেসবুক পোস্টেও লিখেছেন সেই কথা। স্বাস্থ্য় মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তাও।

শুক্রবারই উত্তরবঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য ভবনের চার সদস্যের বিশেষ প্রতিনিধি দল। সূত্রের খবর, চার সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন, চিকিত্‍সক পল্লব ভট্টাচার্য, চিকিত্‍সক বিকাশ মণ্ডল, মাইক্রোবায়োলজিস্ট অধ্যাপক রাজা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়, পেডিয়াট্রিস্ট ড. মিহির সরকার।

জ্বরের প্রাদুর্ভাব নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বছরের এ সময় প্রতিবার‌ই শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এ বছর সংখ্যাটা বেশি। তার মানে ‌এই নয় যে কিছুই ঘটেনি। রোগ যখন হচ্ছে। শিশুদের আইসিইউয়ে ভর্তি যখন করতে হচ্ছে তখন কিছু একটা কারণ‌ও নিশ্চিত রয়েছে।” পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কী কী পদক্ষেপ করতে চলেছে তাও স্পষ্ট করেন স্বাস্থ্য় অধিকর্তা।

রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি HFNO দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Murshidabad: অজানা জ্বরে আক্রান্ত ১৫০, মেডিক্যাল কলেজে মেঝেতেও শুয়ে শিশুরা!

আরও পড়ুন: Jalpaiguri: জাপানি এনকেফালাইটিসের সংক্রমণ নয়, অজানা জ্বর নিয়ে মুখ খুললেন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক