
হুগলি: ৭১ এ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে এয়ারফোর্স নিয়েছিল ডানলপ টায়ার। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধেও ডানলপ টায়ার ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা। বন্ধ ডানলপ। ‘২৫এর যুদ্ধ আবহে ডানলপ রইল না। কী বলছেন শ্রমিকরা?
১৯৯৮ সালে হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা ছাবারিয়া গোষ্ঠীর হাতে থাকার সময় বন্ধ হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে কার্গিলে যু্দ্ধ লাগে ভারত পাকিস্তানের। ডানলপ কারখানাতে সেসময় একমাত্র এরো টায়ার তৈরি হত। ওটিআর বা ‘অফ দা রোড’ টায়ারও তৈরি হত। যুদ্ধ বিমানে এরো টায়ার ব্যবহার হত। আবার ট্যাঙ্কার, বোফর্স কামানের জন্য ওটিআর লাগত।
ডানলপে উৎপাদন বন্ধ। কিন্তু কারখানার ভিতরে টায়ার রয়েছে অনেক। প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্ডেজকে নির্দেশ দেন ডানলপ থেকে সামরিক টায়ার নিয়ে যেতে। সেইমতো ভারতীয় বায়ু সেনা ডানলপ থেকে টায়ার নিয়ে যায়। সেই সময় প্রায় আনুমানিক দশ কোটি টাকা দিয়ে সেই টায়ার কেনে সরকার।
এরো টায়ার তৈরি করতেন ডানলপ শ্রমিক মধু শর্মা। তিনি বলেন, “সে সময় কারখানা বন্ধ, শ্রমিকদের অবস্থা খারাপ। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের জন্য আমরা টায়ার দিয়েছিলাম।প্রথমে শ্রমিকরা রাজি ছিল না। কিন্তু রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বলেছিলেন দেশের স্বার্থ আগে। তাই সেদিন কারখানার গেট খুলে টায়ার বের করে দেওয়া হয়েছিল।এয়ারফোর্সের জওয়ানরা ট্রাক ভরে টায়ার নিয়ে গিয়েছিল।আমরা গর্বিত হয়েছিলাম সরাসরি যুক্ত না হয়েও টায়ার তৈরি করে পরোক্ষভাবে যুদ্ধে শরিক হতে পেরে।”
এখন সেই কারখানার শুধু কঙ্কালসার জমিটাই পড়ে রয়েছে আর কিছুই নেই।কোন সরকার ডানলপের জন্য ভাবে না, হতাশার সুর ধরা পড়ে ওই কর্মীর গলায়।
ডানলপের আরেক শ্রমিক অসীম কুমার বসু বলেন, “সবার আগে আমরা দেশের স্বার্থ দেখেছিলাম। কারখানা বন্ধ শ্রমিকরা বেতন পায় না।তা সত্ত্বেও আমরা কারখানা থেকে টায়ার দিয়েছিলাম। এয়ার ফোর্সের বড় অফিসাররা এসে সেই টায়ার নিয়ে যান।এয়ারক্রাফ্টের টায়ার শুধু নয়, নৌসেনার জন্য জাহাজের ভি বেল্টও যোগান দিত ডানলপ।”