
আরামবাগ: পুজো থেকেই হাওয়া খারাপ। পূর্বাভাস আগেই দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া দফতর। নবমী থেকে চলছে বৃষ্টি। দশমী, একাদশীতে বৃষ্টির দাপট আরও অনেকটাই বেড়ে যায়। এরইমধ্যে ধান জমিতে কীটনাশক স্প্রে করতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারালেন কৃষক। মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে গোঘাট ১ নম্বর ব্লকের রঘুবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলপুর এলাকায়। মৃতের নাম চন্দ্রশেখর কুণ্ড (৫২)।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার সকালবেলায় ধান চাষের জমিতে ধানে কীটনাশক দিতে মাঠে গিয়েছিলেন চন্দ্রশেখরবাবু। যদিও যখন তিনি মাঠে যান তার আগে আকাশ মোটের উপর পরিষ্কারই ছিল। কিন্তু কাজ শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই আচমকা আকাশে ঘন কালো মেঘ জমতে শুরু করে। মুহূর্তেই মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিও শুরু হয়ে যায়, সঙ্গে বিকট শব্দে লাগাতার বজ্রপাত চলতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন বৃষ্টির সঙ্গে আচমকা বাজের হানায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই কৃষক। বৃষ্টি কিছুটা কমতেই স্থানীয় বাসিন্দারা মাঠে ছুটে যান। তাঁরাই ওই কৃষককে উদ্ধার করে।
দ্রুত উদ্ধারের পরেই চন্দ্রশেখরবাবুকে নিয়ে চলে যাওয়া হয় আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে আর শেষ রক্ষা হয়নি। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে দেন। চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর পরিবার এবং গোটা গ্রামে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। পরিবারের অবস্থাও বিশেষ ভাল না, এখন কোন পথে সংসার চলবে তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
এলাকার বাসিন্দারা বলছেন চন্দ্রশেখরবাবু খুবই পরিশ্রমী ছিলেন। চাষের অভিজ্ঞতাও নেহাৎ কম নয়। অনেকেই বলছেন দুর্যোগ দেখেও কাজ না করে মাঠ থেকে ফিরে আসা দরকার ছিল। তাহলে হয়তো এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না। এদিকে শুধু আরামবাগ নয়, প্রত্যেক বছরই বর্ষাকালে গোটা রাজ্যেই বজ্রপাতের সময় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বজ্রপাতের সম্ভাবনা দেখলে, বা অন্যত্র বজ্রপাতের ছবি দেখতে পেলে দুর্যোগপূর্ণ আবহে খোলা মাঠে কাজ না করাই শ্রেয়। তাতে বিপদ অনেকটাই এড়ানো সম্ভব হয়।