
শ্রীরামপুর: হুগলির ঘটনায় চাঞ্চল্যকর মোড়। খুনই করা হয়েছে যুগলকে। সামনে এল সেই তথ্য। এর পিছনে রয়েছে মৃতার বোনের অবৈধ সম্পর্ক। রাতের অন্ধকারে দম্পতির ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে। আর সেই ঘটনার কিণারা করল পুলিশ।
বৈদ্যবাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারাম বাগান এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তারা। বৈদ্যবাটি রাজার বাগানে মনীশের বাড়ি আছে। গত ছয় বছর ধরে সীতারামবাগানে ভাড়া ছিলেন দুজনে।
জানা গিয়েছে, অপর্ণা মাঝি তাঁর প্রথম স্বামীকে ছেড়ে মনীশের সঙ্গে থাকতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপর্ণার ছোটো বোন রিম্পার সঙ্গে একটি পানশালায় আলাপ হয় হাওড়া চামরাইলের বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক অর্জুন পাসোয়ানের। আলাপ গভীর হয় তাঁদের মধ্যে। এরপর রিম্পা নাকি তাঁর স্বামীকে ছেড়ে অর্জুনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন।
রিম্পার বড়দি তাঁদের দু’জনকে তেলেঙ্গনায় কাজের ব্যবস্থা করে দেন। সেখানে কিছুদিন থাকার পর আবার তাঁরা ফিরে আসেন। বিভিন্ন বিনোদন পার্কে দু’জনে ঘুরতেও যান। মাস তিনেক তাঁরা মেলামেশা করার পর রিম্পা হঠাৎ জানান, তাঁর অর্জুনকে পছন্দ হচ্ছে না। আর একজনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
এরপর রিম্পার দিদি অপর্ণা অর্জুনকে তাঁর বোনের সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করেম। বোনকে অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে দেবেন বলেও জানান। নাছোড়বান্দা অর্জুন বারণ শোনেন না। অপর্ণার বাড়িতে এসে তাঁদের হুমকি দিয়ে যান বলেও অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর সেই অর্জুনের সঙ্গ দেয় তার জামাইবাবু নাসিরুদ্দিন শেখ।
ঘটনার তিনদিন আগে আবার বৈদ্যবাটিতে যান সেই অর্জুন। সেখানে বচসা হয় তাঁর সঙ্গে। এরপর প্রকাশ্যে অপর্ণা তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন। পুলিশের দাবি, এই অপমান এবং তাঁর সঙ্গে প্রতারণার বদলা নিতেই সম্ভবত খুনের পরিকল্পনা করেন অর্জুন।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন অর্থাৎ বুধবার শিয়ালদহ থেকে ছুরি কিনে বৈদ্যবাটিতে যান অর্জুন। রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। ভোররাতে অপর্ণার ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় অপর্ণা ও মনীশকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। গোটা শরীর ফালাফালা করে দেওয়া হয়। রাত তিনটে নাগাদ প্রতিবেশীরা চীৎকার শুনতে পায়। এরপরই উদ্ধার হয় দম্পতির রক্তাক্ত দেহ।