হুগলি: কল্যাণী এইমস চাকরি দেওয়ার নাম করে ৭২ লক্ষ টাকার প্ৰতরণার পর্দা ফাঁস করলো হরিপাল থানার পুলিশ। প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে হরিপাল থানার পুলিশ। এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত আরও বেশ কিছু প্রতারকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। এদিন হরিপাল থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায়। পুলিশ সুপার জানান, বেশ কিছুদিন আগেই চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ জমা পড়ে হরিপাল থানায়। এরপরেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ তদন্তে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত প্রথমে বাপ্পা রাউৎ নামে এক ব্যক্তিকে নদিয়ার কল্যাণী থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত মাসের ১৯ তারিখ বাপ্পা রাউতকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।বাপ্পা রাউতকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং এই চক্রের সঙ্গে জড়িত দীপক দাস নামে আরও এক ব্যক্তিকে দুর্গাপুর থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও দুই প্রতারকের খোঁজ পায় পুলিশ। এমডি বাসার ও সুপ্রিয় বিশ্বাস নামে দুজনকে তমলুক ও রানাঘাট থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বর্তমানে জেল হেফাজতে আছে বাপ্পা রাউত এবং বাকি তিনজনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তদন্ত গতি আনতে বা এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত তাদের খোঁজ পেতে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে নিয়োগপত্র সম্পর্কিত বেশ কিছু জাল নথি, ভুয়া নিয়োগপত্র ,দুটি মোবাইল সহ একটি চার চাকার গাড়ি। অভিযুক্তরা নিজেদের কল্যাণী এমসের কর্মচারী এবং নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে পরিচয় দিয়ে গোটা রাজ্যেই জাল বিছিয়ে ছিল বলে দাবি পুলিশের।
সাংবাদিক বৈঠক করে হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষাণু রায় আরও জানান, শুধু হুগলি জেলায় নয়, পুরো রাজ্যেই এই প্রতারণার জাল ছড়িয়ে রয়েছে প্রতারকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো ঘটনা তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
অভিযোগকারী হরিপালের বাসিন্দা শিবনাথ দে। তাঁর দাবি, ২০২১ সালে দীপক দাসের সঙ্গে পরিচয় হয়। ওই ব্যক্তির বক্তব্য, দীপক নিজেকে রাজ্য সরকারের বড় অফিসার বলে পরিচয় দেন। এরপরই শিবনাথ দে চাকরির টোপ দেন দীপক দাস।
শিবনাথ দে তাঁর নিজের আত্মীয়দের কল্যাণী এইমসে চাকরি করে দেওয়ার জন্য ধাপে ধাপে ৭২ লক্ষ টাকা দেয় দীপক দাস সহ কয়েক জনকে। এরপর তাঁদের ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়া ধাপে ধাপে পরীক্ষা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। চার মাস পরই শিবনাথ দে জানতে পারেন, তাঁর আত্মীয়ারা প্রতারণার স্বীকার। গত বছর ডিসেম্বর মাসে হরিপাল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন শিবনাথ দে। এরপরই তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও একাধিক দফতরে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ গ্রেফতার করা হয়েছিল দীপক দাসকে।