Hooghly Kali Pujo: দেবীর সামনে নরবলি দিয়ে গ্রামে ঢুকত ডাকাতরা, আজও এই কালীপুজোয় চলছে আসছে বলিপ্রথা!

Hooghly Kali Pujo: মন্দিরের বর্তমান সেবাইত দীপক কুমার ভট্টাচার্য বলেন, কত বছর আগে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল তা অনেকেরই অজানা। এখানকার মা খুব জাগ্রত। জিটি রোডের দিয়ে যাবার সময় প্রত্যেকটি গাড়ির ড্রাইভার তারা মায়ের কাছে পুজো না দিয়ে যান না

Hooghly Kali Pujo: দেবীর সামনে নরবলি দিয়ে গ্রামে ঢুকত ডাকাতরা, আজও এই কালীপুজোয় চলছে আসছে বলিপ্রথা!
সিমলাগড়ের কালী পুজোImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Nov 11, 2023 | 3:42 PM

হুগলি: প্রায় ৫০০ বছরের পুরনো পাণ্ডুয়ার সিমলাগড়ের দক্ষিণা কালী। শোনা যায় শের শাহ জি টি রোড তৈরি করার আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল। সেই সময় ওই এলাকা ছিল শ্মশান ও জঙ্গলে ভরা। ছিল না কোনও জনবসতি। মানুষ ওই এলাকায় যেতে ভয় পেত। ঠ‍্যাঙ্গারে বাহিনীর উৎপাত ছিল। লোকশ্রুতি আছে, সেই সময় ওই এলাকার এক পুকুর পাড়ে এক কাপালিকের তাল পাতার ছাউনি দেওয়া একটি ঘর ছিল। সেখানে পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে ওই কাপালিক কালীর সাধনা করতেন ।

লোকমুখে শোনা যায়, ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে ডাকাতরা ঘন জঙ্গলে এসে নরবলি দিত  কালীর সামনে। এক সময় রঘু ডাকাতও গিয়ে কালী সাধনা করেছেন , বলে সেখানকার বাসিন্দারা। একদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈন্য চলাচলের জন্য এই রাস্তার গুরুত্ব বাড়তে থাকে। তখনই স্থানীয় মানুষ ভয় কাটিয়ে ওই মন্দিরে পুজো দিতে শুরু করে। এরপরে কালী মন্দিরের উপরে মানুষের বিশ্বাস ক্রমশ বাড়তে থাকে।

লক্ষ্মণ ভট্টাচার্যের পরিবারের আদি পুরুষের আমল থেকেই এই কালীপুজো শুরু হয়েছিল। এই কালী মন্দিরে দেবী কালিকা পূজিতা হন দক্ষিণা কালী রূপে। কয়েক শতাব্দী আগে তখনও পাণ্ডুয়ার সিমলাগড় নামে কোনও গ্রাম ছিল না। এলাকার নাম ছিল হরিহরপুর। সিমলাগড় কালীর নামে এলাকার নাম হয়েছে সিমলাগড়। মন্দিরেই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন এক মৃন্ময়ী কালী মূর্তি। আলাদা করে কোনও নাম ছিল না, দেবী কালিকার। শ্মশানে থাকার জন্য লোকে বলত শ্মশানে কালী, আবার কেউ বলেন ডাকাত কালী।

শোনা যায় ওই পরিবারের এক তান্ত্রিক নটোবর ভট্টাচার্য কালীর পুজো করতে গিয়ে দেখেন মন্দিরের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে নরমুণ্ড। তখন দেবীর পুজো না করে তিনি চলে আসেন। প্রায় চার দিন পর দেবী স্বপ্নাদেশ দেন। তারপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। এখন ছাগ বলি প্রথা চালু রয়েছে। প্রতিদিনই চলে নিত্য সেবা। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে পুজো দিতে কালীপুজোর দিন বিশেষ পুজো পাঠের ব্যবস্থা করা হয়। ১০৮ রকমের ভোগ নিবেদন করা হয় ।বলি প্রথা থাকলেও মাছ দিয়ে ভোগ দেওয়া হয় মাকে। প্রতিবছর দূর দূরান্ত থেকে ভক্তের সমাগম ঘটে মন্দির চত্বরে। মনের কামনা পূরণের জন্য অনেকেই মন্দির সংলগ্ন একটি গাছে ইটের টুকরো বেঁধে দিয়ে যান।

যদিও কালের নিয়মে পাল্টেছে সব। মন্দিরও বেরেছে পরিসরে এবং বহরে। তালপাতায় ঘেরা মন্দির পাকা ও স্থায়ী হয়েছে। মৃন্ময়ী মূর্তি পরিবর্তিত হয়ে কষ্টি পাথরের মূর্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কালী মন্দিরে।

মন্দিরের বর্তমান সেবাইত দীপক কুমার ভট্টাচার্য বলেন,  “কত বছর আগে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল তা অনেকেরই অজানা। এখানকার মা খুব জাগ্রত। জিটি রোডের দিয়ে যাবার সময় প্রত্যেকটি গাড়ির ড্রাইভার তারা মায়ের কাছে পুজো না দিয়ে যান না।” কালী পুজোর দিন বিভিন্ন রকম ফল দিয়ে পুজো দেওয়া হয়। তবে সন্দেশ খেতে খুব ভালোবাসেন। তাই পুজোতে সন্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া দেবীর ভোগে পোনা মাছ দেওয়া হয়। দেবীকে মন থেকে ডাকলে সাড়া পাওয়া যায় মনের কামনাও পূরণ হয় বলে মনে করে পুজো দিতে আসেন ভক্তরা।।