হুগলি: বিহারের কলেজে পড়তে গিয়ে রহস্যজনক মৃত্যু হুগলির যুবকের। কলেজ হোস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। কিন্তু এর পিছনে অন্য রহস্য রয়েছে বলে দাবি ছাত্রের পরিবারের। অভিযোগ, দুর্ঘটনা নয়, ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কলেজের তরফ থেকে কিছু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ছাত্রের নাম সুরম্য সাঁতরা (২১)।
শেওড়াফুলির জগবন্ধু মুখার্জি লেনের বাসিন্দা সুশান্ত সাঁতরার ছেলে সুরম্য সাঁতরা ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। ২০২২ সালে বিহারের মুজাফফরপুর রাজেন্দ্র প্রসাদ ‘এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটিতে’ ভর্তি হন। সেখানে কলেজেরই হোস্টেলে থাকতেন সুরম্য। পরিবারের দাবি, ভোর রাতে কলেজ হস্টেল থেকে ফোন করা হয়। বলা হয় রাত তিনটে নাগাদ হোস্টেলের তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন সুরম্য।
সুরম্যকে প্রশান্ত মেমোরিয়াল চ্যারিটেবল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পূর্বা এক্সপ্রেস ধরে বিকালের মধ্যে ছাত্রের বাবা কাকা বিহারে পৌঁছন। কিন্তু মোজাফফরপুর হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে পাটনা কলকাতা রাজ্য সড়কের বক্তিয়ারপুর এলাকায় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে ছাত্রের দেহ এনে বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ছাত্রের আত্মীয় তিলকচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “হাসপাতাল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয় ময়নাতদন্ত করে। এটাতেই আমাদের সন্দেহ, এর মধ্যে রহস্য কিছু আছে। কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে সময়ের ঘটনা, তখন বিদ্যুৎ ছিল না। তাই পাঁচ ছয় জন ছাত্র হোস্টেলের ছাদে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই কোনওভাবে সুরম্য পড়ে যান। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন পরিবারের সদস্যরা।
ছাত্রের বাবা সুশান্ত সাঁতরা বলেন, “আমাকে ওর কলেজেরই কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র বারবার বোঝনোর চেষ্টা করছে এটা নিছক দুর্ঘটনা। কলেজ খুব দ্রুত সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। একটা সাদা কাগজে ছেলের নাম লিখে দিয়ে দেয়। আমাদের বাড়ির লোক গেলেও, বিহার থেকে দ্রুত দেহ এনে দিয়ে দেয়।” সবটাতেই কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে সন্ধিহান ছাত্রের পরিবার।
প্রসঙ্গত, ঠিক দু’দিন আগেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে পূর্ব মেদিনীপুরে। অন্ধপ্রদেশের কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল থেকে পাশ করা মেধাবী ছাত্র সৌরদীপ। অন্ধ্রপ্রদেশের কে এল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বিটেক কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। গত ২৭ তারিখ বাড়িতে খবর আসে, হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। দু’দিনের ব্যবধানে একই ধরনের দুটি ঘটনা। দুটোই হস্টেলের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু। এক্ষেত্রে বিষয়টি কি নিতান্তই দুর্ঘটনা? নাকি নেপথ্যে রয়েছে র্যাগিং? বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে।