Arambagh: ডাক্তারের ভুল! সাত মাস পেটের মধ্যে এসব নিয়ে কাটাতে হল, কেউ ধরতেও পারল না! ইউএসজি করতেই চোখ কপালে

Hospital: ঘটনার পর মৃত গৃহবধূর স্বামী পিযূষ ও তাঁর পরিবার সাহায্যের আশায় দ্বারস্থ হয় বিজেপি নেতৃত্বের। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি সুশান্ত বেরা একটি সাংবাদিক বৈঠকে দিয়ে বিষয়টি সামনে আনতেই রীতিমতো নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে মহকুমা জুড়ে। এই ঘটনায় অবিলম্বে দোষী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি।

Arambagh: ডাক্তারের ভুল! সাত মাস পেটের মধ্যে এসব নিয়ে কাটাতে হল, কেউ ধরতেও পারল না! ইউএসজি করতেই চোখ কপালে
Image Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Dec 19, 2025 | 2:39 PM

আরামবাগ: সাত মাস আগেই সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন রমা। বাড়ি ফেরার পর থেকে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়। চিকিৎসকরা কোনও রোগ ধরতে পারেননি। এমনকী আরজি করের মতো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও, বল দেওয়া হয় রমা সুস্থই। ছুটি নিয়ে বাড়িও ফিরে যান আরামবাগের বাসিন্দা ওই মহিলা। এভাবেই কেটে গিয়েছে ৭ মাস। শেষ পর্যন্ত আল্ট্রাসোনোগ্রাফির ছবি দেখে অবাক চিকিৎসকরা। অপারেশন করেও শেষ পর্যন্ত আর রমাকে প্রাণে বাঁচানো সম্ভব হল না।

একটানা প্রায় ৭ মাস যন্ত্রণা ভোগ করার পর মৃত্যু হল আরামবাগের খানাকুলের বামুনখানার বাসিন্দা রমা পাখিরার। ডেলিভারির পর পেটের মধ্যেই রয়ে গিয়েছিল গজ, তুলো। আর তা নিয়েই এতগুলো মাস কাটাতে হল ওই মহিলাকে। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠল। রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের কাছে গাফিলতির লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি সাংবাদিক বৈঠক করতেই রীতিমতো উত্তেজনা ও নিন্দার ঝড় শুরু উঠেছে মহকুমা জুড়ে।

মৃত গৃহবধূ রমার স্বামী পিযূষ পাখিরা জানিয়েছেন, গত মে মাসের ২ তারিখে স্ত্রী রমাকে ডেলিভারি ও লাইগেশনের জন্য আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন তিনি। সন্তান প্রসবের পর বাড়ি ফিরেই পেটে যন্ত্রণা অনুভব করেন তাঁর স্ত্রী। সমস্যা সমাধানে আরামবাগের বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন তাঁরা কিন্তু কোনও কাজই হয়নি। গ নির্ণয় করতে পারেননি কেউই। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেও ভর্তি করেছিলেন তিনি। সেখানে ৬দিন ভর্তি থাকার পর সেখান থেকেও রোগীকে সুস্থ বলে ছেড়ে দেওয়া হয়। এদিকে বাড়িতে আসতেই ফের শুরু হয় অসহ্য পেটের যন্ত্রণা।

এইভাবে প্রায় ৭ মাস বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছে দৌড়ঝাঁপ করেও কোনও কাজ না হওয়ায় অবশেষে সরকারি পরিষেবার আশা ছেড়ে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে স্ত্রীকে ভর্তি করেন পিযূষ। সেখানেই আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ধরা পড়ে আসল সমস্যা। কয়েকদিন আগে সেখানে অপারেশন করে পেট থেকে বের করা হয় গজ ও তুলো। কিন্তু দীর্ঘদিন পেটের মধ্যে গজ ও তুলো থাকায় সেপটিকজনিত কারণে গত মঙ্গলবার ওই বেসরকারি নার্সিংহোমেই মৃত্যু হয় রমা পাখিরার।

ঘটনার পর মৃত গৃহবধূর স্বামী পিযূষ ও তাঁর পরিবার সাহায্যের আশায় দ্বারস্থ হয় বিজেপি নেতৃত্বের। আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি সুশান্ত বেরা একটি সাংবাদিক বৈঠকে দিয়ে বিষয়টি সামনে আনতেই রীতিমতো নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে মহকুমা জুড়ে। এই ঘটনায় অবিলম্বে দোষী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই মেডিক্যাল কলেজের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপির নেতাকর্মীরা।

গত কয়েকদিন আগেই আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে শিশু বদলের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল আরামবাগের মানুষকে। তার রেশ কাটতে না কাটতেই চিকিৎসায় এই চরম গাফিলতির ঘটনা সামনে এল। ফলে আরও একবার আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে বড়সড় গাফিলতি অভিযোগ সামনে আসছে। যদিও আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়ের দাবি, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। পুলিশও তদন্ত চালাচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৃত রমা পাখিরার ৭ মাসের নবজাতক সুস্থ রয়েছে।