শ্রীরামপুর : ‘আর নয় কল্যাণ। অ-কল্যাণের মুক্তি চাই… দিদি তুমি বিচার কর, দাদা তুমি বিচার কর।’ এরকমই পোস্টারে ছেয়ে গেল রিষড়া। গত কয়েকদিন ধরেই কল্যাণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। আর সোমবার সকালে একাধিক পোস্টার দেখা গেল হুগলির রিষড়ায়। কারা এই পোস্টার লাগিয়েছে, তা নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এ দিন রিষড়ার ওয়েলিংটন জুটমিল, ছাইরোড, মৈত্রীপথ সহ বিভিন্ন এলাকায় এই ধরনের পোস্টার দেখা গিয়েছে। শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক মন্তব্য করেছেন। আর তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই পোস্টার বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও পোস্টার কে বা কারা মেরেছে তার উল্লেখ নেই।
কোনও পোস্টারে লেখা, ‘দিদি তুমি বিচার কর, দাদা তুমি বিচার কর। মানুষ চায় বিচার হোক, এই পাপের মুক্তি দাও।’ আবার কোনও পোস্টারে লেখা, ‘আর নয় কল্যাণ, অ-কল্যাণের মুক্তি চাই। সুস্থ শহর, পরিচ্ছন্ন মানুষ চাই। নেশাখোর- তোলাবাজ- চরিত্রহীন আর নয়, আর নয়।’
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক সম্পর্কে মন্তব্য করার পর হুগলি তৃণমূলের অনেক নেতা-কর্মীকেই দেখা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করতে। অভিষেকের মন্তব্যকে সমর্থন করে পোস্ট করেন অনেক নেতা। ‘শ্রীরামপুরে কল্যাণ অকল্যাণ’, এমন লেখাও দেখা গিয়েছে। আবার কল্যাণের সমর্থনে তাঁর অনুগামীরা লেখেন, ‘কল্যাণদাকেই চাই।’
রিষড়ার বাসিন্দা আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার সরাসরি কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তোপ দেগেছেন কয়েকদিন আগেই। লোকসভার চিফ হুইপ পদ থেকে পদত্যাগ করার দাবিও তুলেছেন তিনি।
তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির তরফ থেকে এ বিষয়ে দলীয় নেতা- কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সেই প্রসঙ্গে আর একটি কথাও বলেননি। রিষড়া, শ্রীরামপুর ও কোন্নগরে গত দু দিনে কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে কোনও বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়নি। কিন্তু হুগলি জেলায় তাঁর বিরুদ্ধ- গোষ্ঠী এই ঘটনায় সক্রিয় হয়েছে, তা এই পোস্টার থেকেই স্পষ্ট।
গত শনিবারই কলকাতার ভবানীপুরে একদল তৃণমূল সমর্থক তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের হাতে দেখা যায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি বিকৃত করে বেশ কিছু পোস্টার। তাতে লেখা ছিল ‘ধিক্কার’। কোনওটাতে আবার লেখা ছিল, ‘মাতাল তোকে জানতে হবে আগামীকে মানতে হবে’। রাস্তায় পোড়ানো হয় কল্যাণের কুশপুতুলও। বিক্ষোভকারীরা সবাই মদন মিত্রের অনুগামী বলে শোনা যায় স্লোগানে। যদিও এই ঘটনার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, তৃণমূলের কোনও কর্মী এমন কাজ করেনি। তবে দলের অন্দরে চাপান-উতোর যে ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে, তা স্পষ্ট।
আরও পড়ুন : Partha Chatterjee on Madan Mitra: মদন-বাণে বিদ্ধ পার্থ বললেন, ‘আমাদের দলের ব্যাপার, আমাদের বুঝে নিতে দিন’