
হুগলি: তারকেশ্বরে নারকীয় কাণ্ড। ভোররাতে মশারি কেটে টেনে নিয়ে গেল চার বছরে শিশুকে। তারপর যৌন নির্যাতন। রক্তে ভেজা শরীর পাওয়া গেল বেলার দিকে। তাও আবার নিকাশির মধ্যেই। তারপরই এই ঘটনা ঘিরে পড়ল শোরগোল। উত্তেজনা ছড়াল এলাকাজুড়ে। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাল গেরুয়া শিবির। তদন্তে নেমেছে তারকেশ্বর থানার পুলিশ। রাজ্যের নিরাপত্তা ব্য়বস্থা নিয়ে সরব খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
তারকেশ্বর স্টেশন চত্বরেই নিজের পরিবারের সঙ্গে থাকত এই শিশু। শনিবার ভোরে কেউ বা কারা ওই শিশু কন্যাকে ঘুমের মধ্যেই মশারি কেটে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। ঘুম ভাঙতেই উদ্বিগ্ন হয় পরিবার। হন্যি হয়ে একাধিক জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করে তাঁরা। কিন্তু হদিশ পাওয়া যায় না। অবশেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় গ্রামীণ হাসপাতালে। তবে চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় শিশু কন্যাকে। পরিবারের অভিযোগ, শিশু কন্যাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। তার যৌনাঙ্গ থেকে রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিল। কিন্তু তারপরেও হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়নি।
এরপর পরিবারই নিজেদের উদ্বেগে দুপুরের দিকে শিশুটিকে থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে তাঁদের কেউ গ্রাহ্য করেনি বলেই অভিযোগ। যদিও বিকাল গড়াতেই তারকেশ্বর থানার উদ্যোগেই ওই শিশু কন্যাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত তদন্ত চলছে। কেউ গ্রেফতার হয়নি। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় ইতিমধ্য়েই পারদ চড়িয়েছে গেরুয়া শিবির। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করে তাঁরা। এদিন নিজের এক্স হ্যান্ডেলে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর বিভীষিকাময় পৈশাচিকতার রাজত্বে চার বছরের শিশুকন্যাও সুরক্ষিত নয়! এ কোন বীভৎসতার পশ্চিমবঙ্গ? যেখানে ঘুমন্ত একটি দুধের শিশুকেও অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়?’ একই সুর জেলার নেতাদেরও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর বিভীষিকাময় পৈশাচিকতার রাজত্বে চার বছরের শিশুকন্যাও সুরক্ষিত নয়!
হুগলীর তারকেশ্বরের বাসিন্দা চার বছর বয়সী ছোট্ট একটি শিশুকন্যাকে ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। অপহরণের দীর্ঘ সময় পর… pic.twitter.com/E9gzZHwgC6
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) November 8, 2025
তবে এই ঘটনায় কেন্দ্রের দিকেই দায় ঠেলেছেন তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায়। এদিন তিনি বলেন, ‘এই ঘটনা সত্যি দুঃখজনক। যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে সেটি রেল পুলিশের অন্তর্গত। রেল পুলিশের নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে আমার মনে হয়। রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে সকালেই অভিযোগ জানানোর কথা জানানো হয়েছিল। চিকিৎসার জন্য অন্যত্র স্থানান্তরিত করার কথা শুনে দুস্থ ওই পরিবার থানা থেকে চলে যায়। পরবর্তী সময় শিশুটির চিকিৎসা-সহ সব রকম ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।’