Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে টোটো কিনলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী

“বিধানসভার বাইরে এবং ভিতরে সেই সব বঞ্চিত শ্রেণির জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। কোনও আপস করব না।”

মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে টোটো কিনলেন বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী
ছবি: ফেসবুক
Follow Us:
| Updated on: Jun 16, 2021 | 7:05 PM

হুগলি: তাঁর রিকশায় সওয়ার হয়েছিলেন মহাশ্বেতী দেবী। একজন রিকশাওয়ালা ‘জিজীবিষা’ শব্দের মানে জানতে চাওয়ায় চমকে গিয়েছিলেন সাহিত্যিক। সেখান থেকেই রিকশাওয়ালা মনোরঞ্জন ব্যাপারীর (Manoranjan Bapari) ‘লেখোয়াড়’ হওয়া শুরু। তাঁর একের পর এক লেখায় জীবনের গল্প তুলে ধরেছেন তিনি। ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন,’ ‘অন্য ভুবন’, ‘জিজীবিষার গল্প’ সহ নানা গ্রন্থে উঠে এসেছে তাঁর দলিত জীবনের কাহিনী।

মহাশ্বেতার হাত ধরে সাহিত্যের জগতে প্রবেশ করা এই রিকশাচালক মনোরঞ্জন ব্যাপারীকেই এবার বলাগড় থেকে বিধানসভার প্রার্থী করেছিলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গলায় গামছা দিয়ে রিকশা চালিয়েই মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন এই তৃণমূল প্রার্থী। আর বিধায়ক হয়ে কোনও গাড়ি নয়, টোটো কিনে নিজের কেন্দ্রের মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।

এদিন নিজের ফেসবুক পোস্টে বলাগড়ের বিধায়ক লেখেন, “আপনাদের বিধায়ক, আপনাদের সেবক। এতদিনে তার আপনাদের আশীর্বাদে, দয়া আর দানে নিজের একটা বাহন হলো। যে কোন দিন যে কোন সময় এই বাহন বিধায়ককে নিয়ে পৌছে যাবে আপনার দরজায়।”

জীবনের একটা অধ্যায়ে তিনি নকশাল আন্দোলন করেছেন। জেল খেটেছেন। পরবর্তীতে তিনিই হয়ে উঠেছেন সাহিত্যিক। একাধিক পুরস্কার ও সম্মানও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। তিনি মুটে-মজুরি করেছেন, ছাগল চরিয়েছেন, দীর্ঘ সময় যাদবপুর অঞ্চলে রিকশা চালিয়েছেন। এমনকি চায়ের দোকানে টেবিল বয়ের কাজ করেছেন। ছত্তিসগঢ়ের জঙ্গলে কাঠ কেটে তা সাইকেলে করে গ্রামে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেছেন সংসার চালাতে। বিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরনোর সুযোগ হয়নি বটে, কিন্তু দেশের হেন নামী বিশ্ববিদ্যালয় নেই, যেখানে তিনি বক্তব্য রাখেননি। তবু অভাবের জীবনের পরিবর্তন হয়নি।

একটি স্কুলের রাঁধুনির কাজ করতেন। এই বয়সে তা আর করতে না পেরে বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। তাঁর চিঠিতে সাড়া দিয়ে একটি স্কুলের লাইব্রেরিয়ানের কাজে যুক্ত করেছিলেন মমতা। তার পর দলিত সাহিত্য অ্য়াকাডেমির সভাপতিও হন। তার পর ভোটে লড়ে আজ তিনি বিধায়ক। কিন্তু শিকড় ভোলেননি মনোরঞ্জনবাবু। রিকশা থেকে টোটো, বিধায়ক হয়ে ব্যক্তিগত ‘উত্তরণ’ এটুকুই। জানালেন, নিজের কেন্দ্রের মানুষের পাশে তিনি সর্বদা থাকবেন। নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মনোরঞ্জনবাবুর সংশ্লিষ্ট পোস্ট এবং তাঁর এহেন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন নেটিজেনরা।

মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বলেছিলেন, “বিধানসভার বাইরে এবং ভিতরে সেই সব বঞ্চিত শ্রেণির জন্য লড়াই চালিয়ে যাব। কোনও আপস করব না।” ভোটে বিজেপি প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র হালদারকে পাঁচ হাজারের বেশি ভোটে পরাজিত করেন তিনি। এবার মানুষের জন্য কাজ করা শুরু। রিকশা নিয়ে আগের মতো সব জায়গায় পৌঁছান সম্ভব নয়। তাই এবার সঙ্গী হিসেবে টোটোকে বেছে নিলেন মনোরঞ্জন।

আরও পড়ুন: ৫ হাজার টাকায় ৫ বছরের মেয়েকে বিক্রি করে দিলেন বাবা!