Konnagar Municipality: তৃণমূল কাউন্সিলরের জামিন করিয়েছেন বিজেপির আইনজীবী, দল ধরাল শোকজ নোটিস
BJP: বিজেপি নেত্রীকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার জামিন করানো নিয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি।
হুগলি: পুরভোটের আগের দিন বিজেপি নেত্রীকে মেরে পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কোন্নগরের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। সেই প্রার্থী ভোটে জেতেন। মঙ্গলবার শপথও নেবেন তিনি। এদিকে শপথপর্বে তাঁকে যাতে কোনও জটিলতার মুখে পড়তে না হয় সে কারণে আগাম জামিন নিয়ে রাখেন আদালত থেকে। আর এখানে শুরু হয় গোলমাল। যে আইনজীবী ওই তৃণমূল নেতার জামিন করান, তিনি আবার বিজেপি নেতা। শুধু নেতা নন, শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতিও। এই ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এতটাই ক্ষুব্ধ হন যে ওই আইনজীবীকে শোকজ নোটিস ধরান। কোন্নগর পুরসভার শপথ অনুষ্ঠানের আগে তুমুল আলোড়ন ফেলেছে এই ঘটনা। যদিও যাঁকে শোকজ করা হয়েছে সেই বিজেপি কর্মী তথা আইনজীবীর স্পষ্ট বক্তব্য, তিনি পেশা ও রাজনৈতিক আদর্শকে কখনও এক জায়গায় বসান না। ফলে তিনি যা করেছেন তাতে কোনও ভুল খুঁজে পাচ্ছেন না।
কোন্ননগর পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ড। পুরভোটে এই ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী হন কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন তন্ময় দেব। তন্ময় দেব আগের পুরবোর্ডের প্রশাসকও ছিলেন। এবারও ভোটে জিতেছেন তিনি। এই তন্ময় দেবের বিরুদ্ধেই ভোটের আগের দিন বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে। সেদিন রাতে দলীয় অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে আক্রান্ত হন কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। মেরে পা ভেঙে দেওয়া হয় তাঁর। আর এই ঘটনায় তন্ময় দেবের নামেই অভিযোগের আঙুল ওঠে।
কৃষ্ণাদেবীর উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয় এলাকা। বিজেপি নেত্রীকে ভর্তি করানো হয় হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে দেখতে যান এবং পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার কথা বলেন। এরপরই উত্তরপাড়া থানায় তন্ময় দেবের নামে একটি লিখিত অভিযোগও জমা পড়ে। এদিকে মঙ্গলবার পুরসভায় শপথ অনুষ্ঠানের আগে যাতে তন্ময় দেবকে কোনও আইনি জটিলতায় না পড়তে হয় সে কারণেই তিনি আগাম জামিনের আবেদন করেন কলকাতা হাইকোর্টে। তাঁর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তথা শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সহ সভাপতি রঘুনাথ অধিকারী।
রঘুনাথ অধিকারীর এই ভূমিকা মানতে পারেনি বিজেপি। তাদের নেত্রীকে মারধরে অভিযুক্ত যে তৃণমূল নেতা, তাঁর হয়ে কেন ওকালতি করেছেন এই প্রশ্ন তুলে বিজেপি রঘুনাথ অধিকারীকে শোকজ নোটিস ধরায়। যদিও সে চিঠির উত্তরও দিয়েছেন আইনজীবী-বিজেপি নেতা। রঘুনাথ অধিকারী মনে করেন, একজন আইনজীবীর ভূমিকা একজন ডাক্তারের মতই হওয়া উচিৎ। রোগী কোন দলের সমর্থক তা দেখে যেমন কোনও ডাক্তার চিকিৎসা করেন না। একইভাবে একজন আইনজীবী নিজের কাজ রাজনীতির রং দেখে করতে পারেন না। তাই দল যদি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়ও, তাহলে কিছু করার নেই বলেই জানান এই আইনজীবী।
তৃণমূল নেতা তন্ময় দেবের বক্তব্য, কৃষ্ণা ভট্টাচার্য তাঁর ওয়ার্ডে আক্রান্ত হননি। পাশের ওয়ার্ডে আক্রান্ত হন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। মঙ্গলবার কোন্নগর পুরসভার শপথ অনুষ্ঠান। তন্ময় দেবও একজন কাউন্সিলর হিসাবে শপথ নেবেন। তাই শপথ নেওয়ার আগে আগাম জামিন নিয়েছেন। এই লড়াইয়ে যদি কোনও বিজেপি নেতা আইনজীবী হিসাবে তাঁর পাশে থাকেন, তাতে কোনও দোষ রয়েছে বলেও তিনি মনে করেন না। বিজেপি যা করছে, এগুলো আসলে ওদের সংস্কৃতি, মত তন্ময় দেবের। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক দিলীপ যাদব বলেন, “ওরা মিথ্যা অভিযোগ করেছিল। তন্ময়ের জামিনে তা প্রমান হয়ে গেল।” যদিও এই ঘটনায় বিজেপির কারও কোনও বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: Gas Price : এক লাফে অনেকটা দাম বাড়ল রান্নার গ্যাসের, মাথায় হাত মধ্যবিত্তের