হাওড়া: ফের হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে উদ্ধার লক্ষ লক্ষ টাকা! আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রুটিন তল্লাশি চালানোর সময় ডাউন পাটনা-হাওড়া জনশতাব্দী এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর ব্যাগ থেকে নগদ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা উদ্ধার হয়েছে। ওই টাকার বিষয়ে কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না যাত্রীটির কাছে। ওই টাকা তিনি কোথা থেকে পেয়েছেন, বা কি উদ্দেশ্যে কোথায় নিয়ে যাচ্ছিলেন, এই সকল প্রশ্নে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। জানা গিয়েছ তিনি বিহারের বাসিন্দা। তার কথাবার্তায় বিস্তর অসঙ্গতি পাওয়ার পরই নগদ টাকা বাজেয়াপ্ত করে, ওই যাত্রীকে আয়কর দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে। উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে বারংবার হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা, দামি গয়না, দামি বিদেশি সিগারেটের মতো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরপিএফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এদিন হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সে সাদা পোশাকে নজর রাখছিলেন আরপিএফ-এর অপরাধ দমন বিভাগের হাওড়া শাখার আধিকারিকরা এবং অপরাধ প্রতিরোধ ও সনাক্তকরণ স্কোয়াডের (CDPS) আধিকারিক ও কর্মীরা। সেই সময়ই হাওড়া স্টেশনের ১১ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি সন্দেহজনক ভারী ব্যাগ-সহ ওই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আরপিএফ-এর জেরায় ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম নিরজ কুমার, বয়স ৪২ বছর। আরও জানা যায়, তিনি বিহারের পটনা জেলার খাজেমকলা চকের বাসিন্দা। এরপর তাঁর ব্যাগ পরীক্ষা করতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই অর্থের বিষয়ে তিনি কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় এবং কোনও বৈধ নথি দেখাতে না পারায় অবিলম্বে আয়কর বিভাগের কলকাতার কার্যালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করে রেল পুলিশ।
আয়কর বিভাগের দল আসার পর, ওই নগদ অর্থ গণনা করা হয়। দেখা যায়, সব মিলিয়ে ৪০ লক্ষ টাকা রয়েছে। এরপরই ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। সমস্ত আইনি আনুষ্ঠানিকতার পর নিরজ কুমারকে আটক করে আয়কর ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে আরও জেরা করা করবেন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, পাচারের উদ্দেশেই এই টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই ক্ষেত্রে এই পাচার চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এর আগে, গত ডিসেম্বরে হাওড়া স্টেশন থেকেই প্রায় ১০ লক্ষ টাকা বাজারমূল্যের দামি বিদেশি সিগারেট-সহ নুরুদ্দিন শেখ নামে এক যাত্রীকে আটক করেছিল আরপিএফ। হাওড়া স্টেশনের নিউ কমপ্লেক্সে দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়ার আগে স্নিফার ডগ দিয়ে তল্লাশি চালাতে গিয়ে চারটি ব্যাগ পাওয়া গিয়েছিল। সেই ব্যাগগুলি থেকেই মিলেছিল ওই বিদেশি সিগারেট। মুম্বইয়ের বাসিন্দা নুরুদ্দিন দুরন্ত এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন। ওই সিগারেট কেনার কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেননি তিনি। তাকে শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের হাতে তুলে দিয়েছিল আরপিএফ। তার আগে নভেম্বর মাসেও হাওড়া স্টেশন চত্বর থেকে নগদ ১১ লক্ষ টাকা এবং প্রায় ৬১ গ্রাম সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই গয়নার বাজার মূল্য ছিল প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। ওই ঘটনায় ভিকি কুমার নামে ঝাড়খণ্ডের গিরিডির এক যুবককে আটক করা হয়েছিল। তারও আগে হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার হয়েছিল নগদ ৩৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।