হাওড়া: আনিস কাণ্ডে সিট গঠন করল রাজ্য। মুখ্যসচিব ও ডিজির নেতৃত্বে সিট গঠন করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে ঘটনার রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। নবান্নে ঘোষণা করলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আনিস মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবিও ক্রমে জোরাল হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার নিরপেক্ষ তদন্ত করবে। আমি অলরেডি কথা বলেছি। ডিজির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তারা অলরেডি ফরেনসিক রিপোর্টের ব্যবস্থা করেছে। ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক। কোনও মৃত্যুই আমাদের কাছে কাম্য নয়।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আনিসের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ভালো ছিল। আনিস আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। আমাকে অনেক হেল্পও করেছে ইলেকশনে। তাতে ও আমাদের ফেভারিট ছেলে। ঘটনাটা তদন্ত হবে। আমরা একটা সিট তৈরি করছি। সেই সিট চিফ সেক্রেটারি ডিজির নেতৃত্বে হবে। যেখানে সিআইডি থাকবে, সিট থাকবে, সবাই মিলে তদন্ত করবে। পরিবারকেও বলব বিশ্বাস রাখুন।”
আনিসের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন তিনি। নবান্নে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। আনিসের দাদা জানিয়েছেন, তাঁরা নবান্নে যাবেন না। আনিস মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই বঙ্গ রাজনীতি তোলপাড়। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “একটা কম বয়সের ছেলে, প্রতিবাদী ছেলে, ছাত্রনেতা খুন হয়েছে। এটা রাষ্ট্রীয় খুন। এনকাউন্টার নাকি পুলিশের পোশাকে তৃণমূলের গুণ্ডারা খুন? এটা পরে ঠিক করুক। কিন্তু বিচার চাই। এইসময় হঠাৎ তিন চার দিন পর, তথ্য প্রমাণ লোপাট করে দেওয়ার পর এখন মুখ্যমন্ত্রী খবর পাঠিয়েছেন, যদি ওঁরা আগ্রহী থাকেন, তাহলে দেখা করতে পারেন। ওঁরা যেন নবান্নে এসে দেখা করেন। রিজায়ানুরের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুও বাড়ি গিয়েছিলেন। এই ঘটনার সঙ্গে কোনও মিল নেই। তবুও ওই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে গিয়েছিলেন। আর এখানে মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে ডেকে পাঠিয়েছেন।”
বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে। তো সেই তদন্ত হলে ঘটনার সঙ্গে যে পুলিশ জড়িত, তা প্রমাণ হয়ে যাবে। আর যত ধীরে ধীরে পুলিশ এই মামলায় খুনী রূপে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে, তখন মুখ্য়মন্ত্রীর যে নীতি রয়েছে, ঘুষ নীতি, চাকরি দেব, টাকা দেব, তা কায়েম করতে চাইছেন।” আনিসের বাড়িতে এদিন সকালে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন মন্ত্রী পুলক রায়।
আমতার ছাত্রনেতা রহস্যমৃত্যু ক্রমেই জটিল হচ্ছে। তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ সূত্রে খবর, ২৩ ফুট উচ্চতা থেকে পড়েছিল আনিসের দেহ। বাড়ির দেওয়াল থেকে ৩ ফুট দূরত্বে দেহ পড়ে। মূলত মাথা পড়েছিল ৩ ফুট দূরত্বে। বাড়ির তিন তলার যে অসম্পূর্ণ জানালা থেকে ঠেলে ফেলার অভিযোগ, সেটির সামনের গার্ডরেলের উচ্চতা ২ ফুট। এটা ‘ফ্রি ফল’ না ‘পুশ ফল’, তার তদন্ত চলছে। সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই স্পষ্ট হবে। এখনও পর্যন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পায়নি পুলিশ।