হাওড়া: ময়নাতদন্তে কারচুপি। পরিবারের অভিযোগে শেষমেশ টনক সিটের। কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্তে তোড়জোড়। ম্যাজিস্ট্রেটকে ইতিমধ্যেই আর্জি জানানো হয়েছে। হঠাৎ বুধবার সকালে ব়্যাফ নিয়ে আনিসের বাড়িতে বাগনানের অফিসার। পরিবারের তরফে আগে থেকেই অভিযোগ করা হচ্ছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিছু কারচুপি হয়েছে। সিট তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই প্রথমে আমতা থানার পুলিশ কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারপর সাসপেন্ড করা হয় তিন পুলিস কর্মীকে। এরপরই খোঁজ পড়ে আনিসের মোবাইলে। মঙ্গলবার রাতে আনিসের বাড়িতে যায় সিট। তদন্তকারীদের হাতে আনিসের মোবাইল তুলে দিতে চাননি পরিবারের সদস্যরা। আমতা থানার প্রাক্তন ওসি সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায় ও বাগনান থানার অফিসার ব়্যাফ নিয়ে আনিসের বাড়িতে যান। আনিসের বাবা বাগনান থানার অফিসারকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কে?’ তখন বাগনান থানার অফিসার জানান, তাঁর সঙ্গে আনিসের দীর্ঘদিনের পরিচয়। তিনি যখন আমতায় কর্মরত ছিলেন, তখন থেকেই পরিচয়। সেই কারণেই তাঁর আসা। পুরো ঘটনা তিনি আনিসের বাবার থেকে শোনেন। তারপর তিনি জানান, পুনরায় আনিসের দেহের ময়নাতদন্ত হতে পারে। হঠাৎ কেন ব়্যাফ নিয়ে পুলিশ কর্তারা তাঁদের বাড়িতে এলেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আনিসের পরিবার।
এদিকে, আনিস কাণ্ডে আরও একটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সিবিআই-এর দাবিতে সুর চড়াতে এবার হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে খান পরিবারকে। এমনটাই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠছে। জানা যাচ্ছে, গভীর রাতে আনিস খানের দাদা সাবির খানের মোবাইলে ফোন আসে। ‘কেন্দ্রীয় তদন্ত চাইলে বাপ-বেটা খুন’, ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। কল রেকর্ডিং এসেছে TV9 বাংলার হাতে। তবে সেই কল রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
জানা যাচ্ছে, একটি অজানা নম্বর থেকে মঙ্গলবার গভীর রাতে আনিসের দাদার মোবাইলে একটি ফোন আসে। মিনিট খানেকের সেই ফোনে বলা হয়, যদি তাঁরা সিবিআই তদন্তে অনড় থাকেন, তাহলে তাঁদেরকেও সরিয়ে দেওয়া হবে, প্রাণে মেরে ফেলা হবে। অভিযোগ করেছেন আনিসের দাদা সাবির। প্রথম থেকেই আনিসের দাদা ও বাবা এই লড়াইয়ের মুখ হয়ে উঠেছেন।সিবিআই তদন্তের দাবিতে তাঁরা অনড়। আনিসের গোটা গ্রামও সিবিআই তদন্তের দাবিতে সোচ্চার। সেই কলটি রেকর্ড করেছেন আনিসের দাদা সাবির খান। তদন্তকারীদের বিষয়টি জানাবেন তিনি। বুধবার সকালেও তিনি সাংবাদিকদের জানান, রাজ্য পুলিশে তাঁর ভরসা নেই। মঙ্গলবার রাতেও সিটের তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলতে নারাজ ছিল পরিবার। তাঁরা আনিসের মোবাইল সিটের হাতে তুলে দিতে চাননি। সিটের সামনেও তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা সিবিআই তদন্তই চান।
আনিসের বাবা বলেন, “সিবিআই তদন্ত যদি চাও, তাহলে তোমাদের দুই বাপ-বেটাকে মার্ডার করে দেওয়া হবে। শুধু এটুকু বলেই ফোনটা রেখে দিয়েছে। আমাদের রেকর্ডিং করে রাখা হয়েছে।”
আরও পড়ুন: আনিস মৃত্যু রহস্য আরও জলঘোলা, প্রকাশ্যে এক্সক্লুসিভ অডিয়ো ক্লিপ!