হাওড়া : কয়েক বছর আগেই হাওড়া পৌরনিগমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল বালি পৌরসভাকে। কিন্তু মাত্র ছয় বছরের মধ্যেই ফের সিদ্ধান্ত বদল। হাওড়া পৌরনিগম থেকে পৃথক করে দেওয়া হচ্ছে বালিকে। আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে হাওড়া থেকে বালি পৃথক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আগামী শুক্রবার বালিকে হাওড়া থেকে পৃথক করা নিয়ে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার আসবে এই সংক্রান্ত সংশোধনী। উল্লেখ্য, উন্নয়নে আরও গতি আনতে বালিকে হাওড়া পৌরনিগমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের একটি বড় অংশের অভিযোগ, বিগত ছয় বছরে উন্নয়নের তেমন কিছুই দেখেননি বালিবাসীরা। আর তাতেই বালির মানুষের ক্ষোভ বাড়ছিল। তাঁরা চাইছিলেন, আবারও বালিকে হাওড়া পৌরনিগম থেকে আলাদা করে পৃথক পৌরসভা করে দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, সেই ক্ষোভ প্রশমনের জন্যই বালিকে আলাদা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আগামী মাসেই হাওড়া পৌরনিগমে ভোট রয়েছে। ভোট হবে হাওড়া পৌরনিগমের ৫০ টি ওয়ার্ডে। তবে বালির ১৬ টি ওয়ার্ডে এখনই ভোট হচ্ছে না। পরবর্তী সময়ে বাকি পৌরভোটের সঙ্গে বালি পৌরসভারও নির্বাচন হতে পারে বলে খবর।
২০১৫ সালে হাওড়ার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল বালিকে। ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাস করা হয়েছিল। আগে যেখানে বালিতে ৩৫ টি ওয়ার্ড ছিল, তা সংযুক্তিকরণের পর কমে ১৬ টি ওয়ার্ডে এসে দাঁড়িয়েছিল।
দলীয় সূত্রে খবর, যেদিন থেকে হাওড়ার সঙ্গে বালিকে যুক্ত করা হয়েছিল, সেদিন থেকেই এলাকাবাসীদের একটি বড় অংশের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। উন্নয়নের অনেক প্রতিশ্রুতি থাকলেও কাজের কাজ সেভাবে কিছুই হয়নি। আর সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরে বালিবাসীর একটি বড় অংশের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। ভোটবাক্সের তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও বালিতে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছিল রাজ্যের শাসক দল।
আরও একটি বড় সমস্যা ছিল, নাগরিক পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেক সময়েই সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল বালির বাসিন্দাদের। বাড়ির মিউটেশন থেকে শুরু করে যে কোনও কাজের জন্য বালিবাসীকে ছুটতে হচ্ছিল হাওড়ায়। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, একটি দফতর স্থাপন করা হলেও ছিলেন না কোনও বোরো চেয়ারম্যান। ফলে সেই ভোগান্তি আরও বেড়েছিল এলাকাবাসীদের।
তবে এবার বালিবাসীর দাবির কথা মাথায় রেখে ফের একবার হাওড়া থেকে বালিকে পৃথক করে দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, হাওড়া থেকে বালি পৌরসভাকে পৃথক করার দাবিতে গতকালই হাওড়া পৌরনিগমের গেটে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন বাম নেতা ও কর্মীরা। পুলিশের সঙ্গ এক প্রস্থ ধ্বস্তাধ্বস্তিও চলেছিল বিক্ষোভকারীদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল, হাওড়া থেকে বালিকে পৃথক করে ফের আসন পুনর্বিন্যাস করা হোক।