AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

রোমহর্ষক! লাইভেই TV9 সাংবাদিকের সামনেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল তালগাছ-ল্যাম্প পোস্ট

Bengal Flood: দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ উদয়নারায়ণপুরের বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরতে লাইভ সম্প্রচার করছিলেন TV9-এর প্রতিনিধি। সেইসময় আচমকাই দেখা যায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে তালগাছ ও ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি।

রোমহর্ষক! লাইভেই TV9 সাংবাদিকের সামনেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল তালগাছ-ল্যাম্প পোস্ট
লাইভ চলাকালীন বিপত্তি, নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 6:11 PM
Share

হাওড়া:  ঘূর্ণাবর্ত  ও নিম্নচাপের জেরে পুজোর আগেই বানভাসি বঙ্গ (Bengal Flood)।  উদয়নারায়ণপুরে TV9-এর লাইভ সম্প্রচার চলাকালীন আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল তালগাছ ও ল্যাম্পপোস্ট।  একটুর জন্য প্রাণে বাঁচলেন সাংবাদিক। বিগত কিছুদিনে ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে উদয়নারায়ণপুর-সহ একাধিক জেলায়। ভারী বৃষ্টিতে প্লাবন পরিস্থিতি। ফুঁসছে একের পর এক নদী। বাঁধের বিপত্তি সর্বত্র। তবে বাংলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য আবারও ডিভিসিকে (DVC) তোপ দেগেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার, সংবাদমাধ্যমের সম্প্রচার চলাকালীন আচমকা ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি ও তালগাছ এভাবে পড়ে যাওয়ায় কার্যত প্রশ্নের মুখে আমজনতার অস্তিত্ব।

ঠিক কী হয় এইদিন? দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ উদয়নারায়ণপুরের বন্যা পরিস্থিতি তুলে ধরতে লাইভ সম্প্রচার করছিলেন TV9-এর প্রতিনিধি। সেইসময় আচমকাই দেখা যায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে তালগাছ ও ল্যাম্পপোস্টের খুঁটি। জলের মধ্যেই ভাসছে বিদ্যুতের তার। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন দুই সাংবাদিক। ইতিমধ্যেই বন্যায় সর্বস্বান্ত ওই এলাকার নরনারায়ণপুর চকের প্রায় ৩০০ টি পরিবার। রাস্তাতেই ভাসছে বিদ্যুতের খুঁটি। ফলে বিপদের মুখে সাধারণ মানুষ। নিজেদের জীবন বিপন্ন করেই এলাকায় রয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ ছেড়ে চলে গিয়েছেন এলাকা। ক্রমেই বাড়ছে জলস্তর।

শুধু নারায়ণপুর চকই নয়,  জলমগ্ন হয়েছে উদয়নারায়ণপুর স্টেট হাসপাতাল। জলের মধ্যেই সঙ্কটজনক রোগীদের স্ট্রেচারে ঠেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ভারী বৃষ্টি ও ডিভিসির ছাড়া জলে প্রতিবারই বানভাসি হয়ে থাকে উদয়নারায়ণপুর। এই মুহূর্তে এই এলাকার প্রায় সাতটি ব্লক জলের তলায়।

তবে উদয়নারায়ণপুরে বন্যা নতুন কোনও ঘটনা নয়। আগেও বহুবার বানভাসি হয়েছে এই এলাকা। এর আগে বন্যায় ভেসেছিল উদয়নারায়ণপুর ব্লকের এগারোটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। ঘরবাড়ি, ফসলের খেত জলে ডুবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল প্রচুর৷ ব্লকের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কুড়চি ব্রিজের এক দিক বসে গিয়েছিল। সেই সেতুর পাশে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় একটি লোহার সেতু গড়ে দেয় পূর্ত দফতর। তবে সেই সেতু পরে খুলেও দেওয়া হয়।

বঙ্গ বন্যা পরিস্থিতির কারণ হিসেবে ডিভিসিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “ঝাড়খণ্ডের বোঝা বইতে হচ্ছে বাংলাকে।” বন্যা দুর্গত এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে। আগামিকাল, শনিবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন  মমতা।

নবান্ন সূত্রে খবর, আকাশপথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়া, হাওড়া, পুরুলিয়া ও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখবেন। উল্লেখ্য, দু’মাস আগেই হাওড়ার বানভাসি এলাকা, আমতা পরিদর্শনে গিয়ে ডিভিসিকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘ম্যান মেড বন্যা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন তিনি। ২০০০ সালে রাজ্য জুড়ে বন্যার পর মমতা ‘ম্যান মেড’ তত্ত্ব। তার পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ২০১৭ সালে এই হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়েও এমনটাই বলেছিলেন তিনি।

দু’মাস আগে বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিভিসি ইস্যুতে সরকারিভাবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। চারপাতা সেই চিঠির প্রথম লাইনেই মুখ্য়মন্ত্রী লিখেছেন এই বন্যা ‘ম্যান মেড’। পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক সীমারেখা স্পষ্ট করে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ডিভিসির জল ছাড়ার জন্যই ডুবতে বসেছে হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের মতো জেলা। যদিও পাল্টা ডিভিসির পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়েছিল,  রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে একটুও জল ছাড়ে না তারা। জল ছাড়ার পুরো বিষয়টিই রাজ্যের গোচরে রয়েছে। এবারও সেই একই তত্ত্ব খাঁড়া করেন মুখ্যমন্ত্রী।

দুর্গত এলাকাগুলিতে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও এনডিআরএফ টিম। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে পৌঁছেছে ২ কলম সেনা। দুর্গতদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ৮ হাজার মানুষ দুর্গম এলাকা থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। এই খবরটি সম্প্রচারিত হওয়ার সময়ই খবর আসে, হাওড়ার নরনারায়ণচকের একটি বাঁধ ভেঙে ভেসে যায় গোটা গ্রাম।

ইতিমধ্যেই নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। জেলাশাসক ও পুলিশ সুুপারদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠকে ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর। ইতিমধ্যেই একাধিক জায়গায় দুর্গতদের উদ্ধারে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী, নামানো হয়েছে এনডিআরএফ টিম।

আরও পড়ুন: Adir Chowdhury: ‘দিদির মুখে গ্যাস ভরছেন ঝুলন দাদু’, পিকে-কে তীব্র কটাক্ষ অধীরের

আরও পড়ুন: North Bengal: অজানা জ্বরে জবুথবু উত্তরবঙ্গ, কোন জেলায় কত আক্রান্ত, জানাল স্বাস্থ্য দফতর