আমতা : আমতায় নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের (Anis Khan death) বাড়িতে ফের সিটের তদন্তকারী অফিসাররা। শনিবার একজন ফটোগ্রাফার সহ সাত জন অফিসার যান আনিস খানের বাড়িতে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন জায়গায় মাপজোক করেন তাঁরা। কীভাবে আনিস খানের দেহ সেখান থেকে পড়েছিল, সেই সব বিষয়গুলির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেন সিটের অফিসাররা। আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারী অফিসাররা। জানা গিয়েছে, সিটের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আনিসের বাবা। আনিসের বাবার বক্তব্য, “কয়লা কেলেঙ্কারিতে ইডি ডেকে পাঠিয়েছে, সেই জ্ঞানবন্ত সিং সিটের তদন্তে আছেন। সেই জ্ঞানবন্ত সিংকে আমি কীভাবে ভরসা করব? এই জন্য আমার সিটের উপর ভরসা নেই। আমার সিবিআই তদন্তই দরকার।”
এদিকে আনিসের বাবা আরও দাবি করেছেন, তাঁকে নারকো টেস্টের কথা বলেছে সিটের অফিসাররা। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হননি। আর এতে আরও বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসছে। কেন আনিস খানের বাবার নারকো টেস্টের কথা বলছেন সিটের অফিসাররা? তাহলে কি আনিসের বাবার বয়ানো কোনও অসঙ্গতি পেয়েছেন সিটের তদন্তকারীরা? এমন প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে। এদিকে আনিসের পরিবারের আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ জানিয়েছেন, এর আগেও সিটের তরফ থেকে আনিসের বাবার নারকো টেস্টের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পরিবারের তরফে তা নাকচ করা হয়েছিল। এরপর আজ আবার সিটের তরফে নারকো টেস্টের কথা বলা হয়।
উল্লেখ্য, ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতেও মুখ পুড়েছিল রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থার। অভিযোগ উঠেছে, যারা সেদিন আনিসকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলেছিল, তাদের পরনে ছিল পুলিশের পোশাক। যদিও ওই দিন পুলিশের পোশাক পরে কারা এসেছিল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এদিকে আনিস খানের ময়না তদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্ট ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, আনিসের মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। শরীরে বেশ কিছু হাড় ভাঙা ছিল। মাথার খুলির পিছন দিক থেকে ডান কানের উপর পর্যন্ত গভীর ক্ষত রয়েছে। ডান দিকের কপালে ক্ষত রয়েছে। শুধু তাই নয়, খুলির বাঁ দিকের হাড় ভেঙে গিয়ে ঘিলু বেরিয়ে এসেছিল। এমনই আরও বেশ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
কিন্তু আনিসের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের পরেও তাঁর মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। অর্থাৎ, আনিস ছাদ থেকে দুর্ঘটনাবশত পড়ে গিয়েছিল, নাকি তাঁকে কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। এরই মধ্য়ে শুক্রবার বিকেলে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম আনিসের বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আমতায়। কিন্তু আনিসের বাড়ির সামনে থেকেই তাঁকে ফিরে আসতে হয়েছিল। বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। এলাকাবাসীদের একাংশই পথ আটকে দাঁড়িয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিমের। বিক্ষোভ চলে ফিরহাদকে ঘিরে, ওঠে গো ব্যাক স্লোগান। এরই মধ্যে শনিবার বিকেলে ফের আনিস খানের বাড়িতে যায় সিটের তদন্তকারী অফিসাররা।
আরও পড়ুন : UGC Notice: চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ডিগ্রি স্বীকৃতি পাবে না এ দেশে! বিবৃতি দিয়ে জানাল ইউজিসি