হাওড়া: ‘ডেলিভারি বয়’ যখন গ্যাস সিলিন্ডারটা দিয়ে গিয়েছিলেন, তখন থেকেই গ্য়াস বের হচ্ছিল। অন্তত তেমনটাই দাবি পরিবারের। সেসময় তাঁরা বলেওছিলেন, কিন্তু অভিযোগ, ডেলিভারি বয় জানিয়েছিলেন, তাঁর কিছু করার নেই, মিস্ত্রি এসে ঠিক করে দেবে। বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিপদ। বিকট শব্দে ফেটে যায় গ্যাস সিলিন্ডারটি। ঝলসে যান একই পরিবারের ১১ জন। বাড়ির দুই শিশুও আহত হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার শ্যামপুরের বাছড়িতে।
জানা গিয়েছে, অশোক মণ্ডলের বাড়িতে বুধবার বেলা একটা নাগাদ ডেলিভেরি বয় গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার দিয়ে এসেছিলেন। তখনই পরিবারের লোক বুঝতে পারেন, সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বেরোচ্ছে। পরিবারের দাবি, ডেলিভারি বয়কে বিষয়টি জানালে তিনি বলেন, পরে মিস্ত্রি এসে ঠিক করে দেবে। এই বলে ডেলিভারি চলে যান।
পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, ওই ঘরে পাশেই কাঠ জ্বালিয়ে রান্না করছিলেন। সেখান থেকেই আগুন লেগে যায়। পরিবারের ৬ মহিলা দুই শিশু-সহ ১১ জন আহত হয়। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। গোটা বাড়িতে আগুন লেগে যায়। দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে দ্রুত। পাশের পুকুর থেকে জল এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভিতরে আটকে পড়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের অনেকে। তাঁদেরকে কোনওক্রমে বাড়ি থেকে বার করে আনা হয়। তাঁদের অনেকের শরীরের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। তাঁদের উলুবেড়িয়া মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদেরকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গোটা বিষয়টি এতটাই মর্মান্তিক, বিষয়টির খোঁজ নিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত এসডিপিও। ওই গ্যাস ডেলিভারি সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন এসডিপিও। শ্যামপুর থানায় বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার আকস্মিকতার প্রাথমিক ধাক্কা সামলে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে সূত্রের খবর। শ্যামপুর থানার পুলিশও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু করেছে।