
মালিপাঁচঘড়া: দরজা খুলতেই হতবাক পুলিশ। ঘরের দেওয়ালের বিভিন্ন জায়গায় আঠা দিয়ে আটকে রাখা সুইসাইড নোট। সেখানে কোনও চিঠিতে রয়েছে একাধিক অভিমান, কোনও-কোনও চিঠিতে রয়েছে অভিযোগ। আর ঘরের মধ্য গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন যুবক। গোটা ঘটনায় শোকের ছায়া ওই এলাকায়।
হাওড়ার মালিপাঁচঘড়ার ঘটনা। বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে উদ্ধার এক যুবকের দেহ। গলায় ওড়না জড়িয়ে পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহটি। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই দেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের অনুমান মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম মানিক ভট্টাচার্য (৩৯)। মানিকবাবুর ঝুলন্ত দেহের পাশে আটকানো ছিল পরিবারের সদস্যদের ছবি দেওয়া একটি সুইসাইড নোট।
এমনকী, যে ঘর থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে সেই ঘরের দেওয়ালের নানা জায়গাতেও আঠা দিয়ে সুইসাইড নোট আটকানো ছিল। পুলিশ দেহটি হাওড়া জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, পারিবারিক অশান্তির জেরে মানিকবাবুর স্ত্রী ও শিশুকন্যা তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়ায় মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে প্রথমে বিষয়টি নজরে আসে মানিকবাবুর বৌদি সুচন্দনা ভট্টাচার্যের। সকাল ১০টা বেজে গেলেও মানিকবাবু কাজে বেরোননি। সেইটাই দেখে তাঁকে ডাকাডাকি শুরু করেন সুচন্দনা দেবী। এদিকে, বাড়ির দরজা-জানলা সবই ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। অনেকক্ষণ ডাকাডাকির পর সাড়াশব্দ না পাওয়াতে প্রথমে প্রতিবেশীদের খবর দেন সুচন্দনা। তাঁরাই খবর দেন পুলিশে।
এ দিন, মৃতের বৌদি জানান, গত রবিবার একটি ডায়েরিতে কিছু কথা লিখে রাখেন তাঁর দেওর মানিক। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে মানিকের স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে চলে গিয়েছেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, ফোনালাপ থেকেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয় মানিকবাবুর স্ত্রীর। তা নিয়ে মাঝে মাঝেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হত। স্ত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও মাস দু’য়েকের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি মিটিয়ে নেওয়ার কথা মানিকবাবুকে বলেছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।