Bengal Fish Market: বাংলাদেশের ইলিশ তো ছেড়েই দিন, অথৈ জলে ভাসছে আরও অনেক মাছই
Fish Market Howrah: দিন চারেক বাংলাদেশের অশান্তি চরমে ওঠে। আর তার জেরে দু' দেশের মধ্যে ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীমান্তে দাঁড়িয়ে পড়ে সারি সারি ট্রাক। সোমবার শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সীমান্তের আমদানি রফতানি কার্যত বন্ধ।
হাওড়া: বাংলাদেশ জ্বলছে। আর তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে। সীমান্তে ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে দু’দেশের মাছ ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন। তারা কিভাবে এই পরিস্থিতি সামাল দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না। পাশাপাশি এবারের পুজোয় পদ্মার ইলিশ এপারের বাঙালির পাতে পড়বে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে।
দিন চারেক বাংলাদেশের অশান্তি চরমে ওঠে। আর তার জেরে দু’ দেশের মধ্যে ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীমান্তে দাঁড়িয়ে পড়ে সারি সারি ট্রাক। সোমবার শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সীমান্তের আমদানি রফতানি কার্যত বন্ধ।
বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তে সমস্ত ট্রাক দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার হাওড়া মাছ বাজারে বাংলাদেশ থেকে মাছ ভর্তি ট্রাক ঢোকার কথা থাকলেও একটা ট্রাকও আসেনি। মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৮ থেকে ১০টি ট্রাকে প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পাবদা, পারশে, ভেটকি, ট্যাংরা, পমফ্রেট-সহ বিভিন্ন মাছ আমদানি হয়।
আবার ভারত থেকে ১০ থেকে ১২টি ট্রাকে প্রায় ১০০ মেট্রিক টন বোয়াল, রুই, কাতলা , ভেটকি, কাজরি এবং অন্যান্য মাছ বাংলাদেশে রফতানি হয়। মাছের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ব্যবসা বন্ধ থাকার কারণে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ কোটি টাকা করে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। এই ক্ষতি কিভাবে তারা সামাল দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
তাঁরাও চাইছেন, রাজনৈতিক ডামাডোল কাটিয়ে বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরকার গঠন হোক। তাহলেই তারা সুষ্ঠভাবে ব্যবসা করতে পারবেন। ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার ইলিশ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ফলে এপার বাংলায় পদ্মার ইলিশ আশা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পূর্বতন ভারত সরকার বারবার ইলিশ রফতানি নিয়ে বাংলাদেশকে অনুরোধ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
তবে বছর ছয়েক আগে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার পর বাংলাদেশ সরকার দুর্গাপুজোর আগে এ রাজ্যে ইলিশ রফতানিতে অনুমতি দেয়। এই মাছ দেওয়াকে বলতেন পুজোর উপহার। গত বছরেও সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যে প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছিল।
যদিও হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রায় ১২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করেছিলেন। তবে এবারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সেই ছবিটা কী হবে, বুঝে উঠতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মকসুদ জানিয়েছেন, তাঁরা এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিঠি লেখার কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক গোলমালের কারণে কী হবে বোঝা যাচ্ছে না। নতুন সরকার এলে তাদের কাছে একই আবেদন করা হবে। তারা যদি ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয় তবেই বাঙালির পাতে দেখা যেতে পারে ওপার বাংলার রুপোলি শস্য।
বাংলাদেশের এক মাছ ব্যবসায়ী শেখ রফিকুল ইসলাম ব্যবসার কাজে এ দেশে এসেছেন। আপাতত এখানে আটকে। পরিবার পরিজন নিয়ে অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও তিনি ফিরতে পারেননি। এখানকার মাছ বাংলাদেশে আমদানি করতে না পারায় তিনি বড়সড় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন। তিনি চান দেশে দ্রুত একটি সরকার গঠন হোক যাতে তারা খোলা মনে ব্যবসা করতে পারেন।