কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) জাল যে কতদূর ছড়িয়েছে, তদন্তকারীরাই বোধহয় তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না। এই নিয়োগকাণ্ডেই বিচারাধীন বন্দি হয়ে জেলে আছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় থেকে অপসারিত প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। রয়েছেন আরও অনেকেই। ইডি ও সিবিআইয়ের সমান্তরাল তদন্তে কোণাঘুপচি থেকে যখন তখন বেরিয়ে আসছেন কুন্তল, শান্তনুরাও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, চাকরি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা পকেটে ভরেছেন জনপ্রতিনিধি থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ। টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগে নাম জড়িয়েছে এমন কিছু লোকজনের, যাঁদের ‘ব্যাকগ্রাউন্ড’ চমকে দেওয়ার মতো। এক সময় বিড়ি চেয়ে খেতেন, এখন তাঁর অট্টালিকায় বাস। কীভাবে এই ‘বিবর্তন’, অবাক করছে এলাকার লোকজনকে। হাওড়ার শ্যামপুর ব্লকে এরকম বেশ কয়েকটি নাম উঠে এসেছে। এরইমধ্যে একজন জগবন্ধু মণ্ডল। এলাকাবাসীই বলছেন তাঁর নাম।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগে ভাঙা বাড়িতে দিন কাটত জগবন্ধু মণ্ডলের। এখন অট্টালিকা। চাকরি পাইয়ে দেওয়ার পিছনে অনেক বড় হাত রয়েছে বলে দাবি তাঁদের। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “ওর ডিমের ব্যবসা। আগে লোকের কাছে বিড়ি চেয়ে খেত। ভাঙা একটা মাটির দোতলা বাড়ি ছিল। এখন অট্টালিকা।” জগবন্ধু চাকরি দিয়েছিলেন কি না বলতে পারছেন না ওই ব্যক্তি।
তবে তাঁর কথায়, “চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রচুর টাকা করেছে। রাজনৈতিক যোগাযোগ ভাল। এমএলএ-র হাত মাথায় আছে। এমএলএ-র ছাতা মাথায় আছ। না হলে এত কিছু করতে পারে? জেলা পরিষদের সদস্য অম্লান থান্ডার ওদের হেড। আমাদের পাড়ায় গ্রুপ ডি গিয়েছে ২টো।”
যাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠল, সেই জগবন্ধু মণ্ডলের বাড়িতেও গিয়েছিল টিভি নাইন বাংলা। তবে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী বেরিয়ে আসেন। বলেন, তাঁর স্বামী কাজে কোথায় গিয়েছেন, তিনি জানেন না। তিনি জানান, তাঁদের ব্য়বসা। লকডাউনের পর থেকে সেই ব্যবসায় ভাটা পড়ে। তবে স্বামীর বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ শুনে তাঁর স্ত্রী বলেন, “প্রাইমারির চাকরি? উনি কোথা থেকে চাকরি দেবেন? ওনার হাতে কি চাকরি আছে?” আর যে অম্লান থান্ডারকে ‘পাণ্ডা’ বলে তোপ দেগেছেন এলাকার লোকজন, সেই অম্লানের বক্তব্য, “এসব বাজে কথা শোনার মতো মানসিকতা আমার নেই।” অন্যদিকে এলাকার বিধায়ক কালীপদ মণ্ডলেরও বক্তব্য, “সংবাদমাধ্যম বলছে এসব।”