
হাওড়া: বয়স পঁচাত্তর বছর। তিনি ঘুমোচ্ছিলেন। আগুনের আঁচে ঘুম ভেঙে যায় তাঁর। যখন চোখ খোলেন, তখন চারপাশ জ্বলছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিজেপির গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী সোমা রায়-সহ ৬ বিজেপি কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পুড়ে খাক হয়ে যায় সব কটা বাড়ি। ভোট পরবর্তী পর্বে আমতার জয়পুর থানার অমরাগড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে, তার একমাত্র সাক্ষী নয়নতারা রায়। ৭৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা আগুনের আঁচ পেয়ে জেগে ওঠেন।
ওই বৃদ্ধার কথায়, চারপাশে তখন জ্বলছে। তিনি চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে থাকেন। পাশের ঘরে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মাঝরাতে দরজায় ধাক্কা দিয়ে ডাকতে থাকেন। পাশে একটি মুরগির দোকান ছিল, সেটির মালিককেও ডাকাডাকি করতে থাকেন ওই বৃদ্ধা। সেই ডাকেই প্রত্যেকে উঠে পড়েন। চিৎকার – চেঁচামেচিতে গোটা এলাকার ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু বৃদ্ধার দাবি, কেউ এগিয়ে আসেনি।
দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে গোটা বাড়ি। চারপাশ জ্বলতে থাকে। বৃদ্ধা বাড়ি করবেন বলে টাকা জমিয়েছিলেন, সেটাও পুড়ে গিয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তিনি। ১০ ব্যাগ সিমেন্ট পুড়ে গিয়েছে। বাড়ির পোষ্য সব মুরগিগুলো পুড়ছে। সারা বাড়িতে পেট্রোলের গন্ধ।
বৃদ্ধা জানালেন, গণনার দিনে তৃণমূল জেতার পর মিছিল করে যাওয়ার সময় হুমকি দিয়ে গিয়েছিলেন, “পায়রার খোপের মত ঘরে থেকে প্রার্থী হয়েছে! সবাইকে দেখে নেব।” এরপরই গতকাল রাতে জ্বালিয়ে দেওয়া হল বলে জানালেন বৃদ্ধা। বিজেপির অভিযোগ ঘটনার পর পুলিশকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এলাকার বিজেপির কর্মীরা আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।