
মাল বাজার : মালবাজারে হড়পা বানের বিপর্যয়ের পর চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো চাকরিও দেওয়া হয় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের। এবার সেই চাকরিই প্রত্যাখ্য়ান করলেন এক যুবক। সুদীপ পোদ্দার নামে ওই যুবক জানিয়েছেন, তাঁকে স্থায়ী সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এনরোলমেন্ট সার্টিফিকেট হাতে পাওয়ার পর তিনি দেখেন চাকরিটা স্থায়ী নয়। আর তা দেখেই চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আর্জি জানিয়েছেন, যাতে তাঁকে স্থায়ী সরকারি চাকরি দেওয়া হয়।
দুর্গা পুজোর বিসর্জনের সময়ই মালবাজারে হড়পা বানে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রবল জলের তোড়ে মাল নদীতে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয় ৮ জনের। ওই ঘটনার পর মাল বাজারে গিয়ে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুস্মিতা পোদ্দার নামে এক মহিলার নাম ছিল নিহতদের তালিকায়। তাঁর ভাই সুদীপ পোদ্দারকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল।
সুদীপ সাফ জানিয়েছেন, তিনি ওই চাকরি করবেন না। সুদীপের এক দাদা সঞ্জয় পোদ্দার জানান, মমতার প্রতিশ্রুতির কিছুদিন পর সুদীপের হাতে আসে এনরোলমেন্ট সার্টিফিকেট। হোমগার্ডের চাকরি দেওয়া হয় তাঁকে। ১৮ অক্টোবর দেওয়া হয় সেই সার্টিফিকেট। তিনি জানান, কী চাকরি, সেটাই প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা। পরে তাঁরা এসডিপিও-র কাছে যান, কিন্তু সদুত্তর পাননি। পরে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়ে জানতে পারেন, এটা অস্থায়ী হোমগার্ডের চাকরি। সার্টিফিকেটেই উল্লেখ রয়েছে যে, চাকরিটা স্থায়ী নয়, যখন প্রয়োজন পড়বে, তখন ডাকা হবে। এরপরই সুদীপ চাকরি প্রত্যাখ্য়ান করার সিদ্ধান্ত নেন।
মালবাজার টাউনের বিজেপি মন্ডল সভাপতি নবীন সাহা বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার কথা বলে অস্থায়ী চাকরি দেওয়া হল। যতদূর জানি, এই চাকরিতে কাজ করলে তবেই টাকা পাওয়া যাবে।’ তাঁর দাবি, অস্থায়ী চাকরি দিয়ে আদতে মানসিক চাপ দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করা হল না। এই চাকরিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে একটা আইওয়াশ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আর সুদীপ পোদ্দার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিজেপি নেতা।
মাল ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অমিত দে-কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘চাকরির বিষয়টা আমার জানা নেই।’ তাঁর দাবি, ‘বিজেপি তো কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি দিতে পারত।’ তৃণমূল নেতার কথায়, এটা সরকারি ব্যাপার, সরকারই জানবে। গুজরাটের ব্রিজ ভাঙার ঘটনায় কতজনকে স্থায়ী চাকরি দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।