জলপাইগুড়ি: কান্নায় ভেঙে পড়লেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাসের স্ত্রী সুরভি দাস। করজোড়ে অঙ্কুরকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানালেন তিনি। শবকাণ্ডে গোটা দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর রাত্রিবেলা গ্রেফতার হন অঙ্কুর। বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক সংগঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। আজ ধৃত অঙ্কুর দাসকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে।
এ দিন সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে অঝোরে কাঁদতে দেখা যায় অঙ্কুর দাসের স্ত্রী-কে। করজোরে বলেন, “নিজের সন্তান পরিবার ছেড়ে রাত-দিন সামজ সেবা করে চলেছে। তারপরও ওর সঙ্গে এমন করা হল। কালকে পুলিশ এসে ওকে থানায় যেতে বলেছিল। সঙ্গে এও বলে গিয়েছিল ও কোনও দোষ করেনি। এরপর ও নিজেই থানায় হাজিরা দেয়। গোটা দিন ওকে জেরা করেছে। রাত্রিবেলাও ছাড়েনি। কালকে আমাদের সন্তানের জন্মদিন ছিল। তার মধ্যেই…” এরপর সুরভি বলেন, “নিজেকে লোকের জন্য সোঁপে দিয়েছেন। করোনার সময় যাঁরা নিজের বাবা-মা-কে ছুঁতে অস্বীকার করতেন সেই সময় পিপিই কিট ছাড়াই উনি ওদের উদ্ধার করতেন। যাঁরা ওর কাছ থেকে অন্তত উপকার পেয়েছেন তাঁরা এগিয়ে আসুন ওর সাহায্যে এটাই আবেদন।”
গতকাল ছিল অঙ্কুরের ছোট ছেলের দু’বছরের জন্মদিন। সেই দিনই এমন পুলিশি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। এরপর সামাজিক মাধ্যমে সন্তানের ছবি পোস্ট করে তিনি লেখেন, “হতভাগা বাবাকে ক্ষমা করিস। চক্রান্তের শিকার হয়ে তোর বাবা আজ তোর পাশে নেই। দিনভর আইনি জটিলতায় আজ তোর কাছে যেতে পারছি না…”
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার মায়ের মৃতদেহ তুলে সৎকারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে। সেই ঘটনা সামনে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়। জানা যায়, অর্থাভাবে মায়ের মৃতদেহ শবদেহবাহী গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ নেই সেই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।করুণ এই ঘটনার নেপথ্যে উঠে এসেছে বেসরকারি শববাহী যানের জুলুমবাজির অভিযোগ। ৩ হাজার টাকা দর হাঁকানো শববাহী যানের ভাড়া দিতে পারেননি ওই ছেলে। তাই মরদেহ কাঁধে তুলে নিয়েই এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি।
ঘটনার দিন মৃত লক্ষ্মীরানি দেওয়ানের মৃতদেহ যখন নিতে অস্বীকার করেছিল বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং শহবাহী গাড়ির পরিষেবা সেই সময় এগিয়ে এসেছিলেন এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাস ও তাঁদের সংস্থা। সেই অঙ্কুরকেই এবার গ্রেফতার করল পুলিশ।