Bikaner-Guwahati Express Train Accident: রানিনগরে দীর্ঘক্ষণ থমকে ছিল এক্সপ্রেস, চলেছিল পরীক্ষাও, ইঞ্জিনের সমস্যা সত্ত্বেও কেন রওনা? উত্তর অধরা

Maynaguri Rail Accident: সত্যিই কি কিছুই জানতেন না প্রদীপবাবু? তাঁর বয়ান পুনরায় রেকর্ড করা হয়েছে বলে খবর। একইসঙ্গে শনিবারই হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন  কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান।

Bikaner-Guwahati Express Train Accident: রানিনগরে দীর্ঘক্ষণ থমকে ছিল এক্সপ্রেস, চলেছিল পরীক্ষাও, ইঞ্জিনের সমস্যা সত্ত্বেও কেন রওনা? উত্তর অধরা
সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 16, 2022 | 8:55 AM

 জলপাইগুড়ি: ১৩ জানুয়ারী, ২০২২। বৃহস্পতিবার। অন্য সব দিনের মতো ছিল না ওই দিনটা। অন্তত, ময়নাগুড়িতে। ভয়াবহ দুর্ঘটনায় (Maynaguri Rail Accident) লাইনচ্যুত হয় বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের প্রায় ১২ টি কামরা। সেই ঘটনার পরেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে তদন্ত। শনিবার, জবানবন্দি দিয়েছেন চালক প্রদীপকুমার।

সূত্রের খবর, সিআরএস-এর তদন্তে লোকো পাইলট এবং গার্ডকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গিয়েছে, ট্রেনের ইঞ্জিনে আগে থেকেই সমস্যা দেখা গিয়েছিল। এমনকি, ট্রেনটিকে রানিনগরে দাঁড় করিয়ে পরীক্ষাও করা হয়। সেই বিষয়ে স্টেশনের লগ বুকেও উল্লেখ করা রয়েছে। সেই লগ বুক টিসিআরএস নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে বলে খবর সূত্রের।

প্রশ্ন উঠছে, যখন ইঞ্জিনে প্রথমেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল, তাহলে গার্ড এবং রেল চালক কীসের ভিত্তিতে রানিনগর থেকে ট্রেন নিয়ে রওনা দিলেন? কেন পরীক্ষার পরেও কেন রেক পরিবর্তন করা হল না? রানিনগরে দীর্ঘক্ষণ দাঁড় করিয়ে পরীক্ষা চলছিল। সেই পরীক্ষায় কি ইঞ্জিনের সমস্যা ধরা পড়েনি? কেনই বা ট্রেনের ট্র্যাকশন মোটর খুলে গেল? প্রশ্ন একাধিক। কিন্তু উত্তর এখনও অধরা। রানিনগরের ওই লগবুকে কী লেখা হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত রেলের চালক প্রদীপ কুমারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। উত্তম রায় নামে এক যাত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে জিআরপি। সেই যাত্রী আবার পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।

উত্তমবাবুর কথায়, “ট্রেন থেকে আমার ৭০ হাজার টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে। আমার ছেলেটার মাথা ফেটে গিয়েছে। আমায় ডেকে বলা হয়েছিল, কোনও অভিযোগ থাকলে করতে। আমি ভেবেছিলাম, এভাবে হয়ত আমার হারানো টাকাটা ফেরত পাব। আমার ছেলেটার মাথাও  যে ফেটে গিয়েছে তার চিকিৎসা হবে। তাই, অভিযোগ দায়ের করলাম। কিন্তু, আমায় বাড়ি থেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই পুলিশ নিজের মতো এফআইআর লিখেছে। খালি, সই করিয়ে নিয়েছে আমায় দিয়ে। এছাড়া আর কিছুই  করেনি। পুলিশ নিজের মতোই সবটাই সাজিয়ে নিয়েছে।”

কী লেখা হয়েছিল ওই এফআইআরে? লিখিত ওই অভিযোগে নথিবদ্ধ করা হয়েছে, নিউ জলপাইগুড়ি ছাড়ার পরে কোচবিহারের দিকে যাওয়ার পথেই ট্রেনটি অত্যন্ত জোরে চলতে শুরু করে। তারপরেই হঠাৎ জোরে ব্রেক কষে চালক। তারপরেই ট্রেনের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।

কিন্তু কী বলছেন রেলের চালক? প্রদীপকুমারের মন্তব্য, “তখন  ৪টে বেজে ৫২-৫৩ মিনিট হবে। আচমকাই একটা ভীষণ ঝাঁকুনি অনুভব করি। তারপরই এর্মাজেন্সি ব্রেক কষি। পিছনে কী হচ্ছে, আমার পক্ষে জানাটা সম্ভব ছিল না। যখন দেখি, তখন পিছনের ৬ চাকা লাইনচ্যুত হয়েছিল। কারণ আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম। ট্র্যাকশন মোটর খোলা ছিল কিনা, সেটা জানা আমার পক্ষে কোনওপক্ষেই সম্ভব নয়।”

কিন্তু, সত্যিই কি কিছুই জানতেন না প্রদীপবাবু? তাঁর বয়ান পুনরায় রেকর্ড করা হয়েছে বলে খবর। একইসঙ্গে শনিবারই হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়েছিলেন  কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খান। আহতদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বয়ানও নথিবদ্ধ করেন তিনি। সেই বয়ানগুলিও খতিয়ে দেখা হবে  বলে জানিয়েছেন কমিশনার অব রেলওয়ে সেফচটি। বস্তুত কেন এই দুর্ঘটনা তা খতিয়ে দেখা হবে এ কথা আগেই বলেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। সেইমতোই তদন্ত চলছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে, আচমকাই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে উত্তরবঙ্গে। দুর্ঘটনার সময় ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে চলছিল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। দুর্ঘটনায় দেখা যায়, ট্রেনের বগিগুলো খেলনা গাড়ির মতো একে অপরের ওপর উঠে পড়েছে। এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত প্রায় ৪৪ জন। তাঁদের  সকলকেই তৎক্ষণাৎ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি ভর্তি করা হয়। অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে যান। কিছুজন এখনও চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: Weather Updates: মাঘেও ‘মেঘে ঢাকা শীত’, বৃষ্টি-কাঁটা পেরিয়ে কবে থেকে রোদ ঝলমলে দিন…জানাল হাওয়া অফিস