BJP MLA : মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ বিজেপি বিধায়ক

BJP MLA : সুইসাইড নোট উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়। সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে তাঁদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা যুব সভাপতি তথা পুরসভার ভাইরাস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও আরও তিন জনের নাম পাওয়া যায়।

BJP MLA : মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ বিজেপি বিধায়ক
মমতাকে চিঠি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 05, 2023 | 9:24 PM

জলপাইগুড়ি: ভাই ও তাঁর স্ত্রীর রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় এবার মুখ্যমন্ত্রীর (CM Mamata Banerjee) হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁকে চিঠি দিলেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জি। ঘটনায় শোরগোল জেলার রাজনৈতিক মহলে। প্রসঙ্গত, ১ এপ্রিল জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়া রোড এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবী সুবোধ ভট্টাচার্য এবং জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী অপর্না ভট্টাচার্য কীটনাশক খেয়ে করে আত্মহত্যা করেন। এই ভট্টাচার্য দম্পতি সম্পর্কে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জির আত্মীয়। মর্মান্তিক এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় জলপাইগুড়িতে। 

ঘটনার পর খবর পেয়ে ছুটে আসে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ। দম্পতিকে উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষনা করেন। এদিকে ঘটনার তদন্তে নেমে তাঁদের বাড়ি থেকে একটি  ৪ পাতার সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। 

এই সুইসাইড নোট উদ্ধার হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়। সূত্রের খবর, সুইসাইড নোটে তাঁদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা যুব সভাপতি তথা পুরসভার ভাইরাস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও আরও তিন জনের নাম পাওয়া যায়। ওই সুইসাইড নোট প্রকাশ্যে আসার পরেই ঘটনায় নয়া মোড় দেখা যায়। গত ২ এপ্রিল আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে জলপাইগুড়ি কোতয়ালী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সুবোধ ভট্টাচার্যের দিদি তথা ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিজেপি বিধায়ক শিখা চ্যাটার্জী। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান।

এরপর এদিন অর্থাৎ ৫ এপ্রিল বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ফের আসেন শিখা চ্যাটার্জী। অভিযোগ দায়ের করার পরেও এখন কেন অভিযুক্তরা গ্রেফতার হল না পুলিশের কাছে সেই প্রশ্ন করেন তিনি। এরপরই একেবারে চিঠি দিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অপরদিকে এই ঘটনায় আবার জেলা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে আদালতের নজরদারিতে ঘটনার তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। 

বুধবার সাংবাদিক দের মুখোমুখি হয়ে শিখা চ্যাটার্জি বলেন, “এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সৈকত চ্যাটার্জী পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদে এবং যুব তৃণমূল সভাপতির পদে বসে আছে। সৈকত যেহেতু একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তি তাই তিনি ওই পদে যতক্ষন বসে থাকবেন ততক্ষণ পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করবে না। তাই পুলিশের তদন্তের ওপর আমাদের কোনও ভরসা নেই। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সকলের। তাই তার কাছে চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানালাম সৈকত চ্যাটার্জী সহ যারা অভিযুক্ত রয়েছে  তাদের সরকারি এবং দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দিয়ে পুলিশকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিন। অথবা মুখ্যমন্ত্রী যেনো নিজেই এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত চান।” 

অপরদিকে বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি পৌরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলর এবং তৃণমূল ল সেলের আইনজীবীদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সৈকত চ্যাটার্জি। তিনি বলেন, “আমাকে যাঁরা জমি মাফিয়া বলছে আমি তাঁদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “মনোময় সরকারের কাছ থেকে শিখা চ্যাটার্জি  ২১ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে কোতয়ালিতে অভিযোগ জমা পরেছে। ৪/৪/২৩  তারিখে আইনজীবীর মাধ্যমে শিখা চ্যাটার্জির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন মনোময় সরকার। আমি চাই এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তে হোক।” সৈকত চ্যাটার্জি আরও অভিযোগ করে বলেন, “এই আত্মহত্যার পেছনে শিখা চ্যাটার্জির হাত রয়েছে যা ক্রমশ প্রকাশ পাবে।” পাশাপাশি তিনি আইনজীবী ও কাউন্সিলরদের দেখিয়ে বলেন, এই ব্যাপারে দল তার পাশে রয়েছে। 

অপরদিকে এই ঘটনায় তৃণমূল জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ টেলিফোনে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মর্মান্তিক জোড়া আত্মহত্যার ঘটনাত সাথে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই। এখানে রাজনীতির কিছু নেই। কারন সৈকত এর আগে নিজেই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন তিনি আইনজীবী হিসেবে এই মামলায় অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।