ধূপগুড়ি: আড়াই বছরের একরত্তি। হাঁটা শিখেছে, তবে এখনও টলমল পা। সেই ছোট্ট পা-ই যে এমনভাবে মৃত্যুর দিকে ধেয়ে যাবে, এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না ধূপগুড়ি ব্লকের পূর্ব মল্লিকপাড়ার বাসিন্দারা। খেলতে খেলতে বাড়ির পাশে নদীতে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল আড়াই বছরের শিশু রশ্মি পারভিনের। ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ভিতর একটি স্ট্রেচারে শোওয়ানো তার ছোট্ট দেহ। নীল চাদরে ঢেকে দিয়েছেন হাসপাতালের কর্মীরা। ছোট্ট মুখটা তখনও হাঁ করা। শেষ শ্বাসটুকু বোধহয় মুখ দিয়ে প্রাণপণে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। মেয়েকে এভাবে দেখে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাড়ির লোকেরা। বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনা।
পূর্ব মল্লিকপাড়ার গা ঘেঁষে ডুডুয়া নদী। নদীর এক্কেবারে সামনেই বাড়ি রাজা হোসেনের। ঘটনার সময় বাড়ি ছিলেন না তিনি। দুপুরবেলা সকলেই ঘরকন্যায় ব্যস্ত। কোন সময় যে ছোট্ট রশ্মি বাড়ি থেকে বেরিয়ে নদীর দিকে হাঁটা লাগিয়েছে খেয়াল করেনি কেউ। এমনকী রাস্তাঘাটেও কারও নজরে পড়ল না কী করুণ পরিণতির দিকে এগিয়ে চলেছে একরত্তি।
ঘরে অনেকক্ষণ মেয়েকে না দেখে চিৎকার শুরু করেন মা। এরপর খোঁজ। বাড়ির সকলে বেরিয়ে পড়েন রাস্তায়। খবর রটতে পাড়ার লোকেরাও ছুটে আসেন। সকলেই নদীর দিকে যান। দেখেন, জলে ভাসছে রশ্মির দেহ। কোনওক্রমে বুকে তুলে নিয়ে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ছোটেন সকলে। চিকিৎসকরা সঙ্গে সঙ্গে দেখেন। তবে ততক্ষণে ছোট্ট শরীর থেকে বেরিয়ে গিয়েছে প্রাণপাখি। একেবারে নিথর শরীর তার।
রশ্মির এক আত্মীয় মোকসেদুল মিঞা বলেন, “বাড়িতে সকলে কাজে ব্যস্ত ছিল। কোনওভাবে বাচ্চাটা বেরিয়ে যায়। তখন কারও নজরে পড়েনি। এদিকে পাশেই তো ডুডুয়া নদী। ওখানে চলে গিয়েছিল। নেমেও পড়ে। তাতেই সব শেষ হয়ে গেল।” খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। দেহের ময়না তদন্ত হবে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে দেহ পাঠানো হয়েছে।